শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নয়াবিল ইউনিয়নের ভোগাই নদীর পাড় ঘেষা ভয়ানক এক জায়গার নাম ডাক্তার গোফ। বিশাল বালুর পয়েন্ট। দিন-রাত সমান তালে ৩০/৪০ ফুট গভীর করে নদীর পাড় ভেঙ্গে উত্তেলিত হচ্ছে বালু। সেখানে যেতে হলে অনেকের জন্য নিতে হয় অনুমতি। চারিদিকে রয়েছে তাদের সেট করা বিভিন্ন ধরনের লোকজন। কারা কিভাবে সেখানে যাচ্ছে প্রতি মুহুর্তের খবর মোবাইলে পৌঁছে দিচ্ছে তারা। ব্যবসায়ী আর তাদের পরিচিত মুখ ছাড়া অন্য কেউ প্রবেশ করতে লাগবে বিশেষ অনুমতি। আর এসবের কারণ একটাই নির্বিগ্নে বালুর রমরমা ব্যবসায় চালাতে যাতে তাদের কোন ধরনের অসুবিধা না হয়। নদীর মাঝ বরাবর আর কোন বালু নেই। এখন যে বালু রয়েছে সেটি নদীর পাড়। মন খুশি যেভাবে পারা যায় নদীর পাড় ভেঙ্গে স্যালো ইঞ্জিনের বিকট শব্দে দিনে রাতে উত্তোলিত হচ্ছে বালু। সেখানে কোন অভিযান না হওয়ায় পাল্টে ফেলা হয়েছে নদীর গতিপথ। নদী ও নদী কেন্দ্রীক এলাকার সার্বিক পরিবেশ চরম ভাবে বিনষ্ট হয়ে গেছে।
প্রশাসন সূত্রে, প্রশাসন হতে দিনের বেলাতে তো বালু তোলা নিষিদ্ধ করা হয়েছেই। তার উপড় রাতে তোলা হচ্ছে বালু। রাতেও বালু উত্তোলন পুরোপুরি ভাবে নিষিদ্ধ করা হলেও কোন ভাবেই থামছে বালু খেকোদের বালু উত্তোলনের কাজ। সম্প্রতি উপজেলা প্রশাসন কৌশল পাল্টে ভোগাই নদীতে ভোর ৪টায় মোবাইল কোর্ট দিয়েছে। সেখানে মোবাইল কোর্ট দেখে বালু খেকোরা দৌড়ে পালিয়েছে। তাদের ধরা যায়নি। মোবাইল র্কোট দিলেও আগেই তারা বুঝে যায়। তাদের কাছে খবর পৌঁছে যায়। ফলে ১০ মিনিটে বালু খোকোরা স্পটের মেশিন পাইপ অন্যান্য জিনিস সরিয়ে ফেতে সক্ষম বলে জানা গেছে।
সরেজমিন ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, নয়াবিল বাজার হতে সামান্য উত্তরে ডান দিকের রাস্তা ধরে চলে গেছে ডাক্তার গোঁফ নামের এলাকা। তার পরেই ভোগাই নদীর বালুর চর। এই চর আর বালুর নেই। নদীর মাঝ বরাবর হতে বালু উত্তোলন করা হয়ে গেছে। ফলে রয়ে গেছে প্রকৃতিগত ভাবে তৈরি নদীর পাড়। সেই নদীর পাড় হতে নদীর রক্ষা বাঁধ চূর্ন করে ভেঙ্গে ৩০/৪০ গভীর করে বালু উত্তেলিত করা হয়েছে। ফলে নদীর পাড় আর পাড় নেই। সেই নদীর পাড় হতে বালু নিয়ে নেওয়ার নদীর গতি পথ পাল্টে গেছে। বালু খেকোদের ভয়াল থাবায় নদী তার নিজস্ব গতি পথ হারিয়ে ফেলেছে। এবারের আসন্ন বর্ষা আর বন্যায় খড়শ্রোতা ভোগাই নদী তার রুপ কেমন দেখায় এবার তার ভয়াবহতা বুঝা যাবে বলে আক্ষেপ করেছে এলাকাবাসী।
নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হেলেনা পারভীন বলেন, মোবাইল কোর্ট আমরা দিচ্ছি। কিন্তু তারা জেনে যাচ্ছে। আমরা এর কৌশল আমরা পাল্টে দেব। তবে মানুষের ক্ষতি হয় এমন কাজ হতে দেওয়া যাবে না। এদের কে রুখতে এলাকার মানুষ কে এগিয়ে আসতে হবে। এদিকে ডাক্তার গোঁফ যে জায়গাটি রয়েছে এটি নদীর ইজারা মধ্যে থাকলেও নদীর মাঝে কোন বালু নেই। তারা এখন নদীর পাড় ভেঙ্গে বালু তুলছে। ফলে নদী রক্ষাবাঁধ হুমকির মধ্যে। এ ব্যাপারে অভিযান পরিচালিত হবে। এছাড়াও রাতে বালু তোলা নিষেধ অথচ বালু তুলছে। এটি তো চোরাকাররীর আওতায় পড়ে। পুলিশ এবং বিজিবি তো এটির ব্যাপারেও জরুরী পদক্ষেপ নিতে পারে ?