চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার ৪,০৭৭ একর বা ১২,২৩১ বিঘা আয়তনের সরকারি বিল ভাতিয়া। আর সরকারি বেসরকারি মিলিয়ে এর আয়তন ৬,০০০ একর বা ১৮,০০০ বিঘার কিছু বেশি। এই বিলকে ঘিরে রয়েছে নানা ইতিহাস ও ঐতিহ্য। আবহাওয়ার বৈশ্বিক পরিবর্তন ও আমাদের অবিবেচনাপ্রসূত, লাগামহীন গ্রাউন্ড ওয়াটার ব্যবহারের ফলে এই বিশ্ব যেমন উষ্ণ ও অবাসযোগ্য হচ্ছে, তেমনি ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এবং পৃথিবীর জলজ ও স্থলজ নানা প্রজাতিকে আমরা মারাত্মক হুমকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছি। ফলে প্রত্যেকদিন আমাদের মাঝ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে অসংখ্য স্পেসিজ।
পরিকল্পনামাফিক বিলভাতিয়াকে সাজাতে পারলে এই অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের ভাগ্যের চাকা যেমন ঘুরে যেতে পারে। তেমনি কৃষি, প্রকৃতি, পরিবেশ ও প্রতিবেশের জন্য হতে পারে এক আদর্শ উদাহরণ। একে খনন করলে যেমন একাধারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন মত জলাধার সংরক্ষণ করা হবে। তেমনি এই জলাধারকে ঘিরে সার্কুলার বাঁধের পাড়ে লাগানো যাবে বনজ গাছ লাগিয়ে সৌন্দর্যবর্ধক। ফুল ফলের হাজার হাজার গাছ লগিয়ে আয় হবে মোটা অংকের অর্থ। খুলে যাবে পর্যটনের অপার দুয়ার। হোটেল মোটেল হবে অসংখ্য কর্মসংস্থান হবে হাজারে হাজার। এছাড়াও এখানে বছরে মাছ উৎপাদন হবে প্রায় ২/৩ লাখ মেট্রিক টন যার আর্থিক ও আমিষমূল্য সহজেই অনুমেয়। এখাকার সংরক্ষিত জল শুকনো মৌসুমে ব্যবহার করা যাবে প্রায় পুরো চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায়।
বিল ভাতিয়ার উন্নয়ন হলে সবচেয়ে বেশি উপকার হবে বায়োডাইভারসিটির। পাখির অভয়ারণ্য, মৎস্যের স্যাংকচুয়ারি, প্রজাপতির নির্ভয় ডানা মেলা, ঝিঝি পোকার আনডিস্টার্বড ক্লান্তিহীন ডাক, আরো নাম না জানা লাখ লাক প্রাণির নিরাপদ আবাসস্থল হতে পারে এটি। এক কথায়, প্রকৃতির অপরিমেয় উপকার বয়ে আনতে পারে এই বিল ভাতিয়া।
বেশ কিছুদিন থেকেই এই বিলের উন্নয়নে সচেষ্ট রয়েছেন এ অঞ্চলের বিশেজ্ঞমহল। বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ বিভিন্ন সময় এটি পরিদর্শন করেছেন। দিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ। কিন্তু যার আগ্রহ এবং উদ্যোগে এতকিছু হচ্ছে তিনি আজ সাবেক এক সচিব মহোদয় এবং জেলা পর্যায়ের বেশ কিছু কর্মকর্তাকে নিয়ে একদম বিলের মধ্যখানে গিয়ে জানান দিলেন তিনি এর উন্নয়নে করনীয় সব করবেন। তাঁর কথায় জেলাবাসি আশ্বাস পায়। ভোলাহাট উপজেলাসহ জেলাবাসি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মঞ্জুরুল হাফিজের প্রতি। এ ছাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান রাব্বুল হোসেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মশিউর রহমান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ মেহেদি ইসলামসহ অন্যান্য দায়িত্বশীলগণ ভোলাহাট উপজেলাসহ জেলার লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের চেষ্টায় আছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। উপজেলাবাসি দ্রুত সময়ের মধ্যে বিলভাতিয়ায় কৃষি ইপিজেড করে লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে ভাগ্য বদলে দেয়ার দাবী করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে।