আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নয়াবিল ইউনিয়নের নাকুগাঁও স্থলবন্দর এলাকায় জমাকৃত এক লক্ষ ঘনফুট বালু জোড় পূর্বক বিক্রি করে দিচ্ছে বলে ছানুয়ার হোসেন ছানা নামের এক ব্যবসায়ীর বিরোদ্ধে অভিযোগ করেছে শফিকুল ইসলাম নামে এক বালু ব্যবসায়ী।
গত ২১ মার্চ (রোবাবার) শেরপুরের সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে অবৈধভাবে নিলামে দেওয়া বালু অপসারণের নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলা দায়ের করেন মো. শফিকুল ইসলাম।
অভিযোগপত্রের সূত্রে জানা গেছে, গত বাংলা সনে এক বছরের জন্য স্থানীয় মের্সাস আল আমিন ট্রেড্রাস নামে এক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নালিতাবাড়ী উপজেলার ভোগাই নদীর কালাকুমা, হাতিপাগার, তন্তর, মন্ডলিয়াপাড়া, নয়াবিল, আন্ধারুপাড়া, ফুলপুর, কেরেঙ্গাপাড়া মৌজার ২৬.৯০ একর বালুমহাল ইজারা প্রাপ্ত হয়ে বিভিন্ন ব্যাক্তির মাধ্যমে বালু উত্তোলন করেন। এদিকে নকলা উপজেলার বারইকান্দি এলাকার মৃত মহসিন সরকার এর ছেলে শফিকুল আলম নাকুগাওঁ এলাকার প্রসন্ত আড়েং এর জমি ভাড়া নিয়ে বালু উত্তোলন করে স্তুপ করে রেখে দেন। করোনার প্রার্দূভাবের কারণে সেই জমাকৃত বালু বিক্রি করা বা সরানো সম্ভব হয়নি। এছাড়াও জেলা প্রশাসন হতে ভোগাই নদীর নাকুগাওঁ মৌজা এলাকায় ১৪২৭ বাংলা সনে কোন ইজারা দেওয়া হয়নি।
এদিকে গত ৯ মার্চ নালিতাবাড়ী উপজেলা র্নিবাহী কর্মকর্তা হেলেনা পারভিন বৈধকৃত উত্তোলিত বালুর উপড় মোবাইল র্কোট দিয়ে তাৎক্ষনিক বালু নিলামে বিক্রির জন্য ডাক দেয়। ওই সময় স্থানীয় ছানুয়ার হোসেন ছানা নামের এক ব্যবসায়ী নিলামে অংশগ্রহণ করে বালু ক্রয় করে নেয়। পরে নিলামকৃত বালু বৈধ দাবীদার শফিকুল আলম তাৎক্ষনিক জেলা প্রশাসক শেরপুর, উপজেলা র্নিবাহী কর্মকর্তা নালিতাবাড়ী, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও স্থানীয় বালু ব্যবসায়ী ছানুয়ার হোসেন ছানাকে বিবাদী করে শেরপুরের সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে ওই বালুর নিলাম অবৈধ ঘোষনা করা, অপসারণ ও বিক্রি বন্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং অন্য প্রকার ৪৭/২০২১।
আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে উপজেলা র্নিবাহী কর্মকর্তা নালিতাবাড়ী ও স্থানীয় বালু ব্যবসায়ী ছানুয়ার হোসেন ছানাকে পাচঁ দিনের সময় দিয়ে বিবাদীদের বিরুদ্ধে কেন অস্থায়ী ও অন্তর্বতীকালিন নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে না মর্মে কারণ র্দশানোর নির্দেশ প্রদান করেন। উল্লিখিত সময়ের মধ্যে জবাব না দেওয়ায় আদালত গত ২৮ মার্চ নালিশি তফসিল বর্নিত ভূমি হতে মজুদকৃত বালু কোন পক্ষ যেন অপসারণ করতে না পারে তৎমর্মে উভয় পক্ষ কে স্থিত অবস্থার আদেশ দেন।
কিন্তু বিবাদী ছানুয়ার হোসেন আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দেদারসে বালু বিক্রি করে চলেছেন। গত বৃহস্পতিবার ১ এপ্রিল ঘটনাস্থলে গেলে ছানুয়ার হোসেন ছানা কে সেখানে পাওয়া যায়নি। তবে ছানুয়ার হোসেন ছানার এর প্রতিনিধি স্থানীয় নাকুগাওঁ এলাকার জিলানী ও রুহানী নামে দুই ভাই জানান, নিলামে প্রাপ্ত বালুর মালিক ছানুয়ার হোসেন ছানার। তার নির্দেশে আমরা এখান থেকে বেকু দিয়ে ট্রাক ভর্তি করে গত এক সপ্তাহ যাবৎ বালু বিক্রি করে আসছি, আজকেও চার ট্রাক বালু বিক্রি করেছি।
এদিকে শেরপুরের সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের নোটিশ জারী কারক মো. আবদুল বারি জানান, আদালতের নিষেধাজ্ঞার নোটিশ জারি করতে বিবাদী মো. ছানুয়ার হোসেন এর বাড়ীতে গেলে তিনি নোটিশ গ্রহন না করে উল্টো দূর্ব্যবহার করেন। পরে স্থানীয়দের স্বাক্ষী রেখে ওই নোটিশ তার দরজায় টাঙ্গিয়ে জারি করে আসছি।
বালু ব্যবসায়ী শফিকুল আলম জানান, বৈধভাবে ১৪২৬ সনে ভোগাই নদীর নাকুগাও এলাকা থেকে প্রায় এক লাখ ঘনফুট বালু উত্তোলন করে করুনার প্রাদূরভাবের কারণে তা বিক্রি করতে পারি নাই। তাই বালু ¯ুÍপ করে রেখে দেই। বালুগুলি উপজেলা প্রশাসনকে ভুল বুঝিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী ছানুয়ার হোসেন জব্দ করে নিলামের ব্যবস্থা করায়, আমার প্রায় বিশ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে, আদালতের কাছে এ ব্যাপারে আমি ন্যায় বিচার র্প্রাথনা করছি।
এ ব্যাপারে আদালতের নিষেধাজ্ঞার অমান্যকারী বালু ব্যবসায়ী ছানুয়ার হোসেন এর কাছে মোঠফোনে জানতে চাইলে তিনি আদালতের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে কিছু জানেন না বলে সাফ অস্বীকার করেন।
নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হেলেনা পারভিন বলেন, আমি আদালতের নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে কোন কাগজ হাতে পাইনি।