বিতর্কিত হেফাজত নেতা মামুনুল হক আবাসিক হোটেলে নারীসহ আটকের ইস্যুকে কেন্দ্র করে মহেশখালীতে আওয়ামী লীগ অফিস ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। রোববার বিকেলে জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মেয়র মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল মহেশখালী পৌঁছান।পরে স্থানীয় দলীয় নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে বড় মহেশখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগকৃত অফিস পরিদর্শন করেন তিনি। সেখানে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি সিরাজ মিয়া বাঁশির সভাপতিত্বে তাৎক্ষনিক এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেয়র মুজিবুর রহমান।
এসময় তিনি বলেন, মহেশখালীতে স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, বাঙ্গালীর আবেগ অনুভূতির প্রতিচ্ছবি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে স্বাধিনতা বিরোধি অপশক্তি যেসব হেফাজতি সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে তাদের চিহ্নিত করে শিগগিরই আইনের আওতায় আনা হবে। তাদের কেউ আর রাজপথে নামলে মুহুর্তের মধ্যে প্রতিহত করা হবে।
মেয়র মুজিব আরও বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম, তাই যারা পবিত্র ধর্ম ইসলামকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দেবার চেষ্টা করছেন তাদের কাউকেই ছাড় দেয়া হবেনা। হেফাজতিরা জামায়াত-বিএনপির ঘুনে ধরা অপশক্তিকে সাথে নিয়ে ইসলাম প্রিয় সহজ-সরল মানুষদের ধর্মান্ধ বানিয়ে দেশে অরাজকতা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আওয়ামী লীগ তথা শেখ হাসিনার নেতাকর্মীরা বেঁচে থাকতে কক্সবাজারের কোথাও আর কোন নাশকতা হতে দেয়া হবেনা বলে হুঁশিয়ার করেন তিনি।
এসময় বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল হক মুকুল, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান চৌধুরী, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক কাজী মোস্তাক আহমদ শামীম, মহেশখালী পৌরসভার মেয়র মকছুদ মিয়া, জেলা যুবলীগ সভাপতি সোহেল আহমদ বাহাদুর, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল হক সোহেল, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি এসএম সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনানসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
প্রতিবাদ সভা শেষে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে নিক্ষেপকৃত ময়লা নিজ হাতে পরিস্কার করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেয়র মুজিবুর রহমান।
এসময় তিনি অশ্রুসিক্ত নয়নে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন এবং ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে জাতির পিতার প্রতি স্যালুট জানান মেয়র মুজিব।
সেখান থেকে মহেশখালী থানা পরিদর্শনে যান জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মেয়র মুজিবুর রহমান। থানায় কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলামের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হয়ে আইনশৃংখলা কড়াকড়িভাবে নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন তিনি। এ সময় সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (মহেশখালী সার্কেল) জাহেদুল ইসলাম, মহেশখালী থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ মো.আবদুল হাইসহ প্রশাসনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, শনিবার রাত ১২টার কিছু সময় পর একটি বিশাল লাঠি মিছিল বড় মহেশখালী তান্ডব চালিয়ে থেকে উপজেলা সদরে আসে, মিছিলটি পৌর শহরের গোরকঘাটা বাজার থেকে সড়কের দু’পাশে ভাঙচুর চালিয়ে উপজেলা পরিষদ এলাকায় যায়, উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কাছের জানালা ভাঙচুর করে।
এ সময় মূল ফটক বন্ধ পেয়ে সরকারি কার্যালয় লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পরে মিছিলটি মহেশখালী থানার সামনে গিয়ে থানায় ব্যাপক ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে স্লোগান দিতে থাকে। ফটক বন্ধ থাকায় ভেতরে প্রবেশ করতে না পেরে বাইরে ব্যাপক ভাংচুর চালায়।