পীরগঞ্জে ৯ম শ্রেনীর স্কুল ছাত্রীকে অপহরনের পর ওই ছাত্রীকে পাচারকারীদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে ? নাকি হত্যার পর লাশ গুম করা হয়েছে ? এ নিয়ে সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে অপহৃতার পরিবারে। যে কারণে ঘটনার পর ৩১ দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ অপহৃতাকে উদ্ধার করতে পারেনি। মামলার প্রধান আসামি শিহাব মিয়া মোবাইলে অপহরনের কথা শিকার করলেও এখন বলছে তাকে বগুড়াগামী একটি বাসে তুলে দেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য,গত ৭ মার্চ উপজেলার চতরাহাটে প্রাইভেট পড়ে বাড়ী আসার পথে ওই ছাত্রীকে অপহরণ করা হয়। মামলা, অপহৃতার পরিবার ও এলাকাবাসীর সুত্রে জানা গেছে, চতরাহাট গ্রামের ‘মা ডেকোরেটর’ এর মালিক আবদুল ওয়াহেদ মিয়ার মেয়ে চতরা আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেনীর ছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস মনা। প্রতিদিন সে চতরাহাটেই শিক্ষক আলমগীর হোসেনের কাছে সকাল ৮টায় বাড়ী থেকে গিয়ে প্রাইভেট পড়ে ১০টায় বাড়ী ফিরলেও ৭ মার্চ নির্দিষ্ট সময়ে বাড়ী ফেরেনি। ঘটনার পুর্ব দিন অপহৃতার মা’র মোবাইলে একটি মোবাইল নম্বর থেকে ‘হাই’ লেখা এসএমএস এলে ওই মোবাইলটিতে অপহৃতার মা ফোন দেন। অপরপ্রান্তে শিহাব খান কল রিসিভ করে তার পরিচয় দেয় এবং সে চতরা আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী বলে জানায়। এ সময় শিহাবের কাছে থাকা মেয়ে মনাকে ফেরত চাইলে শিহাব অসংলগ্ন কথা বলে। একসময় শিহাব জানায়, মনা এক বন্ধুর বাড়ীতে গেছে। ওইদিনই বিকেলে এসএমএস দেয়া মোবাইলের ব্যাপারে থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ প্রযুক্তির মাধ্যমে মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে। ট্রাকিংয়ে দেখা যায় অপহরনের পর অপহৃতাকে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ থানার কাঠের ব্রীজ,পীরগঞ্জের আনন্দ নগরে নিয়ে যায়। সেখান থেকে পীরগঞ্জ বাসষ্ট্যান্ড হয়ে গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে শিহাবসহ অপহরনকারী ৩/৪ জন ওই ছাত্রীকে বগুড়াগামী একটি বাসে রাত ৯টার দিকে তুলে দেয়। এরপর একমাস পেরিয়ে গেলেও মেয়েটির সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে অপহৃতার মা মুন্নি বেগম বাদী হয়ে পীরগঞ্জ থানায় শিহাব খান, ভাতিজা রোমান খান (২৮), মাইক্রোবাসের চালক রানু মিয়া (২৭) এবং তার বাবা মিকরাইল খান (৫৮) কে আসামি করে মামলা করলে পুলিশ রোমান (২৩) কে গ্রেফতার করে। এ ব্যাপারে অপহৃতার বাবা ওয়াহেদ মিয়া বলেন, প্রধান আসামীর পরিবার বিভিন্নজনের কাছে বলেছে, গাইবান্ধার পলাশবাড়ী থেকে ৭ মার্চ রাতে বগুড়াগামী অজ্ঞাতনামা একটি বাসে আমার মেয়েকে একাই তুলে দিয়েছে। মনে হচ্ছে আমার মেয়েকে তারা পাচারকারীর হাতে তুলে দিয়েছে। একমাসেও আমি মেয়ের সাথে কথা বলতে পারিনি। এখন মেয়ে বেঁচে আছে কি না, বুঝতে পারছি না। ওই এলাকার প্রভাবশালী গ্রাম্য মাতবর শিহাবের চাচা মিষ্টার খান (৫৬) বলেন, এই এলাকায় আমিই দেওয়ানী-দরবারী করি। আমি যতদুর জানি শিহাবের কাছে মেয়েটি নেই। তবে শিহাব মেয়েটিকে নিয়ে মাইক্রোবাসে করে বিভিন্ন স্থানে গিয়েছে বলে শুনেছি। এখন মেয়েটির কিছু হলে আমরাই ফেঁসে যাবো। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন বলেন, ২নং আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে,বাকিরা পলাতক রয়েছে। এখনও অপহৃতার কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি।