হোন্ডা কেনার জন্য ৪ লাখ টাকা যৌতুক দাবী করে স্ত্রী অনিতা রানী দাসকে শাররীক নির্যাতন করে বাড়ী থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে স্বামী তন্ময় দে। এ ঘটনায় অনিতা বাদী হয়ে তন্ময় দেকে আসামি করে গত ৪ এপ্রিল রাজবাড়ীর জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট-এর ১ নং আমলী আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। (মামলা নং-সি আর ২৫১/২১)। ওই মামলাটি আদালতের বিচারক লাবনী আক্তার আমলে নিয়ে আসামি তন্বয় দের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন।
জানাগেছে, অনিতা রানী দাস রাজবাড়ী জেলা শহরের বিনোদপুরের রোকন কুমার দাসের মেয়ে এবং তন্ময় দে জেলা শহরের দক্ষিণ ভবানীপুরের যন্ত্রশিল্পী তপদ দে-এর একমাত্র সন্তান।
মামলার বাদী অনিতা রানী দাস আদালতকে জানিয়েছেন, আসামি তন্ময় দে চরিত্রহীন, লম্পট, কুরুচিপূর্ন মনোবৃত্তির, বিকিৃত যৌন লালসা প্রবিত্তির, যৌতুক লোভী এবং নারী নির্যাতনকারী প্রকৃতির। ইতঃপূর্বে ২০২০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী সিঁথিতে সিদুর পড়িয়ে দিয়ে, তাদের বিয়ে হয় গেছে বলে বাদীকে আস্বস্থ করে, আসামি বাদীর সংগে দৈহিক মেলামেশা করে। পরবর্তিতে এভাবে বিভিন্ন সময়ে বাদীর সংগে আসামি দৈহিক মেলামেশা করতে থাকাকালীন বাদী ২০২০ সালের ৯ অক্টোবর বিয়ে রেজিস্ট্রি করার কথা বলিলে আসামি তাতে অস্বীকার করে এবং কিসের বিয়ে তোমার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নাই বলে তাদের মধ্যেকর সমস্ত সম্পর্ক কে অস্বীকার করে। তাদের সম্পর্কের বিষয়ে আসামি অস্বীকার করায় বাদী ২০২০ সালের ৮ নভেম্বর আসামি পক্ষের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাঙ্গে ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১)/৩০ মিস. পি-২৫৩/২০ নং মামলাটি করেন। মামলাটি রুজু হবার পর অসামী ঘটনার বিষয়ে বাদীর সংগে আপস মিমাংসা অন্তে ২০২০ সালের ২৪ নভেম্বর রাজবাড়ী সদর উপজেলার নিরঞ্জন কুমার বাড়ৈ, হিন্দু বিবাহ নিবদ্ধনী রাজবাড়ী-এর নিকট হতে হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন বিধি মালা অনুযায়ী বিবাহ রেজিষ্ট্রি করেন। পরবর্তিতে বাদী আসামীদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নাই মর্মে জবানবন্দি প্রদান করে ২০২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারী মামলাটি প্রত্যাহার করেন। সে মতে, আসামি বাদী কে নিয়ে সংসার ধর্ম পালন করতে থাকা কলীন বিভিন্ন সময়ে বাদীর নিকট কৌশলে যৌতুকের বিষয় উত্থাপন করতে থাকে, যা একপর্যায়ে যৌতুকের দাবীতে পরিনত হয় এবং আসামি হোন্ডা ক্রয় বাবদ নগদ চার লক্ষ টাকা যৌতুকের দাবীতে বাদীকে মানষিক নির্যাতন করতে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে ২০২১ সালের ১৩ মার্চ আসামি হোন্ডা ক্রয় বাবদ নগদ চার লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী করলে, বাদী অস্বীকার করায় তাকে শারীরিক নির্যাতন করে আসামীর বাড়ী থেকে এক কাপড়ে বের করে দেয়। অসহায় বাদী কোন কূল-কিনারা না পেয়ে তার পিতার বাড়ী অর্থাৎ বর্তমান ঠিকানায় আশ্রয় নেয়। বাদীর পিতা মাতা ও আত্মীয়-স্বজনরা ঘটনার বিষয় শুনে আসামীর সংগে যোগাযোগ করে বিষয়টি নিস্পত্তির জন্য আসামি কে বাদীর বর্তমান ঠিকানায় আসতে বললে, আসামি ঘটনার দিবসে বাদীর বর্তমান ঠিকানায় আসে। অত:পর ঘটনার দিবস ও সময়ে স্বাক্ষীগনের সম্মুখে বাদীর পিতা বাদী কে নিয়ে সংসার করার জন্য আসামি কে বললে, আসামি বলে যে, আমাকে আপনারা কিছুই দেননি, সে কারণে আমাকে একখানা হোন্ডা ক্রয়ে জন্য চার লক্ষ টাকা যৌতুক দিতে হবে। আসামি কে বাদী বিভিন্ন ভাবে অনুনয়-বিনয় করলে, আসামি তার কথায় অনড় থাকে এবং বলে জামাকে হোন্ডা ক্রয় বাবদ নগদ চার লক্ষ টাকা যৌতুক না দিলে, আমি বেশি পরিমানে যৌতুক গ্রহন করে অন্যত্র বিয়ে করবো বলে চলে যায়। অসহায় বাদী কোন কুল-কিনারা না পেয়ে তার পিতার বাড়ী অর্থাৎ বর্তমান ঠিকানায় অদ্যাবধি মানবেতর জীবন যাপন করছে।
এই মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী বিপ্লয় কুমার রায় জানিয়েছেন, আদালত মামলার পরবর্তী তারিখে হাজির হতে আসামি তন্ময় দের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছে।