বিএ পাশ করেও জীবন নামের ভাগ্যে কোন চাকুরী জুটেনি। বর্তমানে জীবিকার কারণে একটি ‘স’ মিলে কাঠ কাটার মিস্ত্রী হিসাবে কাজ করে সংসার চালচ্ছেন শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার ভালুকাকুড়া গ্রামের মোঃ জাহাঙ্গীর আলম নামের একজন শ্রমজীবি মানুষ। জীবনে আশা ছিল একজন শিক্ষক হবেন। দায়িত্বে নিবেন শিশুদের পড়াশুনার। সাথে ওই স্কুলে পড়াবেন নিজের বাচ্চটিকেও। হয়নি। মিথ্যে আশার গুড়েবালি। জাহাঙ্গীরকে যোগানিয়া বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হওয়া ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত করে দিবে মর্মে এ বছরই যাবতীয় কার্য সম্পাদন ও নিয়োগ প্রক্রিয়া চুড়ান্ত করতে নিয়োগকর্তা শিক্ষক আবু সাইদ ধার্য করেছিলেন ৩ লাখ টাকা। তিন লাখের মধ্যে আড়াই লাখ টাকা দেওয়ার পরও বিদ্যালয় (ইএমআইএস) কোড ও চাকুরীর কোন কাগজ না দেখানোয় সন্দেহ ও বিদ্বেশ এর জন্ম নেয় জাহাঙ্গীরের। ফলে বিচারের আশায় আবু সাইদ মাষ্টারের বিরোদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন বলে জানান ভুক্তভুগি জাহাঙ্গীর আলম।
অভিযোগ পত্রের সূত্রে, জাহাঙ্গীর জীবনের সব উর্পাজন ও বাড়ীর যাবতীয় জিনিস বিক্রি করে একসাথে করে আড়াই লাখ টাকা যোগাড় করে স্বাক্ষী করে ষ্ট্যাম্পের মাধ্যমে টাকাটা আবু সাইদের ছেলে আল আমিনের কাছে বুঝিয়ে দেয়। এর মধ্যে নগদ একলাখ, বিদ্যালয়ের (ইএমআইএস) কোড এনে দিবে মর্মে আরো একলাখ ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বই আনার জন্য আরো পঞ্চাশ হাজার টাকা দিতে হবে এই কথা বলে জাহাঙ্গীরের নিকট হতে মোট আড়াই লাখ টাকা বুঝে নেয় আবু সাইদ ও তার ছেলে আল আমিন। কিছুদিন পর আবু সাইদ মাষ্টার বিদ্যালয়ের (ইএমআইএস) কোডর একটি কাগজ দেখায়। যার পাশে লেখা বিদ্যালয়টি নিষ্ক্রিয়। এ ঘটনায় জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে শেরপুর কোর্টে সিআর আমলী নালিতাবাড়ী আদালতে মামলা দায়ের করেছে। মামলা নং-৯০/২১। বিষয়টি তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ওসি নালিতাবাড়ীকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এব্যাপারে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আবু সাইদ মাষ্টারের দেওয়া গোল সীল যুক্ত তালিকা বোর্ডে গিয়ে পরিক্ষা নিরিক্ষা করে দেখি সেটি নিস্ক্রিয়। বিদ্যালয়ের (ইএমআইএস) কোড বিদ্যালয় চাকুরীকরন নয় এবং ৫ম শিক্ষক নিয়োগের সরকারী কোন বিধান নেই। অর্থ্যাৎ আমি প্রতারনার শিকার। এখন আমার দেওয়া আড়াই লক্ষ টাকা ফেরত চাইলে সে বিভিন্ন তালবাহানা করতে থাকে। অবশেষে আবু সাইদ মাষ্টার ও তার ছেলে আল আমিন আমার উপড় চড়াও হয় এবং আমার উপড় দুটি মিথ্যা ভুয়া মামলা করে। পরে অনেক চিন্তা করে আমি একমাস পর আইনের দারস্থ হই।
এব্যাপারে আবু সাইদ মাষ্টার বলেন, সব কিছু মিথ্যা বানোয়াট। ষড়যন্ত্রে আমাদের সামাজিক ভাবে হেয়প্রতিপন্ন করছে। যেহেতু সে আইনের দারস্থ হয়েছে। সেহেতু আমি আইনের আইনের মাধ্যমেই সেটির জবাব দেব।
উল্লেখ্য নালিতাবাড়ী উপজেলার গেরাপচাঁ গ্রামের মজনু নামে এক ব্যাক্তির নিকট হতে স্কুল করে দিবে মর্মে শিক্ষক আবু সাইদ মাষ্টার টাকা গ্রহন করে এবং এর বিরোদ্ধে উপজেলা শিক্ষা অফিস হতে অভিযোগের ভিত্তিতে ঊর্ধ্বতন মহলের নিকট শিক্ষক আবু সাইদের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।