একসময় যে স্কুল শিক্ষকের অধীন ১১ জন শিক্ষক পাঠদান করাতেন প্রতি মাসে সেই স্কুলের নিয়োজিত শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠানের ভাড়া বাবদ হাজার হাজার টাকা গুনতেন, আজ মহামারী করোনায় সব বন্ধ থাকায় পথে বসার উপক্রম। করোনায় কর্মহীন হয়ে সেই স্কুল শিক্ষক আজ কচু বিক্রেতা। শেরপুরের নকলা উপজেলায় করোনায় স্কুল,কলেজ ও কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার কারণে আজ বাধ্য হয়েই ওই পথ বেছে নিয়েছেন শিক্ষক আব্দুল জলিল। তার মতো একই অবস্থা এ উপজেলায় আরও শতাধিক কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষকদের।
জানা যায়, নকলা পৌরসভার গেইটে বেবি কেয়ার স্কুল ছিল আব্দুল জলিলের। প্লে শ্রেণি হতে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান হতো। গত বছর থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত কিন্ডারগার্টেন স্কুল বন্ধ থাকায় বর্তমানে করুণ পরিণতি দিনযাপন করতে হচ্ছে আব্দুল জলিলের। দীর্ঘদিন যাবত স্কুল বন্ধ থাকায় বর্তমানে তিনি অন্যের ২০ শতাংশ জমিতে কচু চাষ শুরু করে তা থেকে সামান্য আয় দিয়ে চলছে কোনমতে মোট ৫ জনের সংসার। কচু ও লতি বিক্রি করে এখন সপ্তাহে আয় মাত্র ৬শ টাকা। বাসা ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়ে আছে প্রায় ১ বছর ধরে। করোনায় ইতোমধ্যে আব্দুল জলিল তার সংসার চালাতে গিয়ে এরই মধ্যে ২ লাখ টাকা ঋণের বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছেন। স্কুলের আসবাবপত্র এরই মধ্যে বেশিরভাগই নষ্ট হয়ে গেছে। অনেকেই শিক্ষকতা পেশা পরিবর্তন করে বাধ্য হয়ে অন্য পেশায় নিয়োজিত হয়েছে।
গত বছর সরকারের পক্ষ থেকে করোনায় অনুদান পেয়েছিলেন মাত্র ৫শ টাকা সম্প্রতি বেসরকারি স্কুল কলেজের প্রায় ১ লাখ শিক্ষকের ৫ হাজার ও কর্মচারীদের আড়াই হাজার টাকা অনুদান প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। তবে এত কষ্টের মাঝেও সুখবর নেই কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষকদের। প্রায় দেড় বছর ধরে সরকার সারা দেশের সব স্কুল কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছে মহামারী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে। তবে ওই বেসরকারি স্কুল কলেজের শিক্ষক ও কর্মচারীদের পেটের ক্ষুধা লাঘবের কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
নকলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান বলেন, করোনায় কর্মহীন বেসরকারি স্কুল কলেজ ও কিন্ডারগার্ডেন শিক্ষকদের অবস্থা খুবই করুণ অবস্থা। গত বছর সরকারের পক্ষ থেকে হাতে গোনা কয়েকজন করোনায় অনুদান পেয়েছিলেন। এ বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।