দিনাজপুরের পার্বতীপুরের একটি ইউনিয়নে বৈধ-অবৈধ ১৯টি ইটভাটা। একই ইউনিয়নে এসব ইটভাটার কারণে ৩০০ একর জমির আম ও ধানসহ ৩০ প্রকার ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। ইউএনও বরাবর ৩ শতাধিক কৃষকের স্বাক্ষরিত স্মারকলিপি গত ২৩মে দেয়া হয়েছে। দেয়া হয়েছে ২৩৩জন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা। কিন্তু প্রশাসন কেবল ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিয়েছেন। কোন কার্যকর উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
এমন অভিযোগ এনে ইটভাটার কারণে বিষাক্ত গ্যাসে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা মানববন্ধন করেছেন।
সোমবার বেলা ১১টায় পার্বতীপুর উপজেলার হামিদপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ পলাশবাড়ী ভাটার মোড় নামক স্থানে এই মানববন্ধন করে ওইসব ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামবাসীরা।
আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ না দিলে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে মানববন্ধনে হুশিয়ারী দেন তারা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় ধানসহ বিভিন্ন ফসল পুড়ে যাচ্ছে। পরিপক্ব হওয়ার আগেই পঁচে ঝরে পড়ছে বাগানের আম, বিভিন্ন ফল, বাঁশ ঝাড় পুড়ে যাচ্ছে। দক্ষিণ পলাশবাড়ী ও বাঁশপুকুর মৌজার ছয়টি ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় এই এলাকার ধান পুড়ে গেছে এবং বাড়ির চারপাশের আম, লিচু, জলপাই, পেয়ারা, কাঁঠাল ও অন্যান্য গাছের পাতা কুঁকড়ে গেছে। পুড়ে যাওয়া ফলগুলো ঝরে পড়ছে। ৫০টি বাগানের আমের নিচের অংশ পচে মাটিতে পড়ে যাচ্ছে। বাগানের আমগুলো বর্তমানে বিক্রির অনুপযোগী।
নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করে আরও বলেন, ১৩ ও ১৫মে ভোরে হামিদপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ পলাশবাড়ী ও বাঁশপুকুর মৌজার ওইসব ইটভাটার ছেড়ে দেয়া বিষাক্ত গ্যাস পুরো গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দুই মৌজার ৩০০ একর জমির ধান, ৫০টি আম বাগান, বাঁশ ও লিচু বাগান, কলা, নারিকেল, পেয়ারা, জলপাই, বাদামসহ বিভিন্ন ফসলের মাঠ নষ্ট হয়ে গেছে। এতে এলাকার প্রায় ২ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। তাই ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপুরন আদায়ে গঠিত ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাসে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, জেলা সম্পাদক আনোয়ার আলী সরকার, বাংলাদেশ কৃষক খেত মজুর সমিতির জেলা সভাপতি আখতার আজিজ, সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাসে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক সংগ্রাম পরিষদের উপদেষ্টা সঞ্জিত প্রসাদ জিতু, নীলফামারীর বাংলাদেশ কৃষক খেতমজুর সমিতির নেতা শফিকুল আলম, ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাসে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সচিব মাসুদ রানা, সংগ্রাম পরিষদের সদস্য ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার জয়নাল আবেদীন, সংগ্রাম পরিষদের সদস্য ফাত্তানুর, এরশাদ, নাজমা বেগম, আফরাজুল রহমান আপন, মনিরুজ্জামান মনির প্রমুখ।