ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলায় চরআলগী ইউনিয়নে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের মরা খালে পানি উন্নয়ন বোর্ড অপরিকল্পিত খাল খননের ফলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার অধিদপ্তরের ১ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মানাধীন তিনটি সেতু ভেঙ্গে জলে পড়ে রয়েছে। সেতু ভেঙ্গে পড়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় চরআলগী ইউনিয়নের ১০ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গ্রামীন যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল রাখতে গফরগাঁও উপজেলার চরআলগী ইউনিয়নের চরমছলন্দ কুরতলী পাড়া রাস্তায় পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের মরা খালের উপর ২০১৩-২০১৪ইং অর্থ বছরের ৪৭ লাখ ৪২ হাজার ৭১৮ টাকা ব্যয়ে ৬০ ফুট সেতু, কলেজ ফেরিঘাট হতে পূর্ব টেকিরচর রাস্তায় ২০১৬-২০১৭ইং অর্থ বছরের ৫৪ লাখ ৪ হাজার ৬৫১ টাকা ব্যয়ে ৬০ ফুট সেতু এবং ২০১৭-২০১৮ইং অর্থ বছরে বুরাখালী চরে খালের উপর ৩০ লাখ ৭৭ হাজার ৬৫৭ টাকা ব্যয়ে ৪০ ফুট সেতু নির্মান করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। সেতু তিনটি নির্মাণে তাতে মোট ব্যয় হয় ১ কোটি ৩২ লাখ ২৫ হাজার ২৬ টাকা। সেতু তিনটি নির্মাণের ফলে চরাঞ্চলবাসীর চলাচলে খুবই উপকৃত হয়েছিলেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড অপরিকল্পত খাল খননের ফলে সেতু গুলোর নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে গত ২৬, ২৭ ও ২৮ মে তিন দিনে ব্যবধানে স্্েরাতের তোরে দুই কিলোমিটারের মধ্যে তিনটি সেতুই ধসে পড়ে। নির্মাণের কয়েক বছরের মধ্যে তিনটি সেতু ভেঙ্গে পড়ায় দুর্গম চরাঞ্চলবাসী বর্তমানে চরম ভোগান্তি পড়েছেন। বিশেষ করে চরাঞ্চলের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত কৃষিপন্য পরিবহনের ক্ষেত্রে মারাতœক দুর্ভোগে পড়েছে। এদিকে নির্মাণের অল্প সময়ে মধ্যে সেতু গুলো ভেঙ্গে যাওয়া নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সেতুগুলো নির্মাণকারী কর্তৃপক্ষ ত্রান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর একে অপরকে দোষারোপ করে বক্তব্য দিয়েছেন।
স্থানীয় কৃষক আবু সাঈদ ফকির জানান, এভাবে খাল খনন করা ঠিক হয়নি। সেতু গুলো ভেঙ্গে যাওয়া আমরা এখন চরম কষ্টে পড়েছি। আমাদের উৎপাদিত ফসল বিশেষ করে শাক সবজি পরিবহনে ক্ষেত্রে চরম দুর্ভোগে পড়েছি। চরআলগী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মাসুদুজ্জামান বলেন,পানি উন্নয়ন বোর্ড পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদে (মরা খালের) অপরিকল্পতি ভাবে খাল খনন করছেন। আর এ অপরিকল্পিত ভাবে খাল খনননের ফলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর নির্মানাধীন তিনটি সেতুর নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে ভেঙ্গে পড়েছে।
সেতু তিনটি ভেঙ্গে পড়ার বিষয়ে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রনালয়ের গফরগাঁও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড আমাদেরকে না জানিয়ে খাল খনন কাজ শুরু করেছেন। সেতু গুলো নির্মাণের আগে খাল গুলো সরু ছিল। দরপত্রের সিডিউল অনুযায়ী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গুলো সেতু নির্মাণ করেছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড সেতু গুলোর কাছে গভীর করে খাল খনন করায় মাটি সরে গিয়ে বেইজমেন্টে ফাটল ধরে ভেঙ্গ পড়েছে।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মুসা জানান, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের মরা খালে সেতু নির্মাণের আগে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রনালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছ থেকে কোন মতামত নেয়নি। নিজেদের দোষ আড়াল করতে তারা এখন পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দোষারোপ করছেন।