ধর্ষণ মামলায় ৯মাস জেল খেটে ছাড়া পেয়েছেন মোস্তফা শিকদার (৪০) নামে এক যুবক। ধর্ষণের শিকার তরুনীর পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে ধর্ষণের কারণে ওই তরুনীর ৩মাস আগে কন্যা সন্তানের মা হয়েছেন। কিন্তু ডিএনএ পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে মোস্তফা শিকদার ধর্ষন করেনি। তাহলে ওই তরুনীর কন্যা সন্তানের পিতা কে? এমন প্রশ্ন এখন গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার তারাশী গ্রামের কয়েক হাজার নর-নারীর মুখে মুখে।
জানাগেছে, গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর কোটালীপাড়া থানায় একটি ধর্ষণ মামলা হয়। বাদী তার মামলায় উল্লেখ করেন, ২০২০ সালের ১৩এপ্রিল তারাশী গ্রামের মৃত্যু আজগার আলী শিকদারের ছেলে মোস্তফা শিকদার তার বোনকে ধর্ষন করে। এই ধর্ষনের ফলে বাদীর বোন অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। বাদীর বোন ৫মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর তিনি কোটালীপাড়া থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের দিন দিবাগত রাতেই কোটালীপাড়া থানা পুলিশ মোস্তফা শিকদারকে গ্রেফতার করে ২৪ সেপ্টেম্বর আদালতে প্রেরণ করেন। এরপর দীর্ঘ প্রায় ৯মাস জেল খেটে চলতি বছরের ২৪ মে মোস্তফা শিকদার জামিনে মুক্তি পায়।
এদিকে চলতি বছরের মার্চ মাসের মাঝামাঝি বাদীর বোন ওই তরুনী এক কন্যা সন্তানের মা হন। এরপর মোস্তফা শিকদারের পরিবারের পক্ষ থেকে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য গোপালগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে আবেদন করেন। এই আবেদনের পরে আদালত ডিএনএ পরীক্ষার নির্দেশ প্রদান করেন। আদালতের নির্দেশ মোতাবেক কোটালীপাড়া থানা পুলিশ বাংলাদেশ পুলিশ ফরেন্সিক ল্যাবরেটরি থেকে ডিএনএ পরীক্ষা করান। এখানে ডিএনএ পরীক্ষার পর এখানকার ডিএনএ এক্সপার্ট দিপাঙ্কর দত্ত রিপোর্ট প্রদান করেন। রিপোর্টে তিনি উল্লেখ করেন, ডিএনএ পরীক্ষায় নিশ্চিত ভাবে প্রমাণিত হয় যে মোস্তফা শিকদার ওই তরুনীর গর্ভজাত সন্তানের জৈবিক পিতা নয়। ডিএনএ পরীক্ষার এই রিপোর্টের কথা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে তারাশী গ্রামের কয়েক হাজার নর-নারীর মুখে মুখে একই প্রশ্ন তাহলে এই কন্যা সন্তানের পিতা কে?
এ বিয়য়ে বাদীর বোন ওই তরুনীর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি কোন প্রকার মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে মামলার বাদী বলেন, আমরা এই ডিএনএ পরীক্ষার রির্পোট মানি না। পূনরায় ডিএনএ পরীক্ষার জন্য আদালতে আবেদন করবো।
মোস্তফা শিকদার বলেন, আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ৯মাস জেল খাটানো হয়েছে। বর্তমানে আমি এই মামলায় জামিনে আছি। আমি একজন শ্রমজীবী মানুষ। দৈনিক আয় করে আমার সংসার চালাতে হয়। দীর্ঘ এই ৯মাস জেলে থাকার কারণে আমি সর্বশান্ত হয়েগেছি। আমাকে যে হয়রাণি করা হয়েছে তার জন্য আমি বিচার ও ক্ষতিপূরণ চাই।
কোটালীপাড়া থানার ওসি মো: আমিনুল ইসলাম বলেন, ডিএনএ পরীক্ষার রির্পোট পাওয়ার পরে মোস্তফা শিকদারকে মামলা থেকে বাদ দিয়ে মামলার ফাইনাল রির্পোট আদালতে দিয়েছি। আদালত যদি এই মামলার পূনরায় তদন্তের নির্দেশ দেন তাহলে আমরা তদন্ত করে বের করার চেষ্টা করবো যে এই কন্যা সন্তানের পিতা কে।