দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার অলিগলিতে বেসরকারী হাসপাতাল আর ক্লিনিক হওয়ায় দালাল চক্রের কারণে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেলিভারি রোগি আসা আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি ডেলিভারি রোগি চিকিৎসা সেবা নিতে আসার পথে রোগির আত্মতিয় সেজে মিথ্যা ত্বত্ত্ব দিয়ে ভূল বুঝিয়ে রোগিকে নিয়ে যায় ক্লিনিকে। এই কাজে নিয়োজিত রয়েছে একাধিক দালাল। আর এই দালালদের দৌরাত্বে হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারী বন্ধের উপক্রম।
এসব ক্লিনিক এবং হাসপাতালে সেবার পরিবর্তে শুরু হয়েছে প্রসুতি সিজারের নামে এক ধরণের ব্যবসা। অর্থের লোভে তাদের হয়ে কাজ করছে একটি দালাল চক্র। আবার গ্রামাঞ্চলে কিছু অদক্ষ, প্রশিক্ষন বিহিন ধাত্রী রয়েছে। যারা স্থানীয় ভাবে দাই মা বলে পরিচিত। এই দাই মার কারণে প্রসূতি মায়েদের মৃত্যু ঝুকি থাকে এবং মৃত্যুও ঘটে। এমন অনেক ঘটনার নজির রয়েছে এলাকায়। ক্লিনিকে প্রসুতি ও শিশু মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েক বার সংঘর্ষ ও সড়ক অবরোধের ঘটনাও ঘটেছে।
নরমাল ডেলিভারির সাথে হাসপাতালের রয়েছে স্বার্থহীন সম্পর্ক। হাসপাতালের চিকিৎসকগণ বিনা খরচে রোগির সব সেবা দেয়। একটি ডেলিভারি রোগি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সাথে সাথে রোগির পরিক্ষা করা পর সব কিছু স্বাভাবিক থাকলে নরমাল ডেলিভারী করার জন্য তাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকে। প্রয়োজন না হলে সিজারের জন্য রোগীকে পরামর্শ প্রদান করেন না।
২০১৭ সালে একদিনে ২৭টি নরমাল ডেরিভারীর মাধ্যমে সন্তান প্রসবে সফলতা ও সুনাম অর্জন করে দিনাজপুর জেলায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। চিকিৎসকগণের এই মহতি উদোগ্য ভেস্তে যেতে বসেছে শুধুমাত্র দালালদের দৌরাত্বের কারণে।
সিজারের নামে বানিজ্যে, দালাল চক্র এবং অদক্ষ ধাত্রীর হাত থেকে প্রসুতি মায়েদের রক্ষায় এবং নিরাপদে নরমাল ডেলিভারী করাতে হলে প্রশাসনের আশু এবং কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. আফরোজ সুলতানা লুনা জানান, এ হাসপাতালে ডেলিভারী নিরাপদ করতে ৫জন দক্ষ মিডওয়েফ রয়েছেন। কারণ হাসপাতালে নিরাপদে ডেলিভারী করানো হলে মৃত্যুর ঝুকি থাকে না। সিজারের মাধ্যমে সন্তান প্রসবে শিশুসহ প্রসুতি মৃত্যুর ঝুকি থাকতে পারে। একজন প্রসুতি একাধিক বার সিজারের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করলে তার মৃত্যু ঝুকির পাশাপাশি শারিরিক জটিলতা দেখা দেওয়ার সম্ভবনা বেশি থাকে। অথচ নরমাল ডেলিভারীতে মানুষের অর্থ সাশ্রয় হয়। পাশাপাশি স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত ও নিরাপদ হয়।