ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে একটি ওয়ার্ডে অনিয়মের অভিযোগ এনে বরিশালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এম নূরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনের সচিব ও সহকারী সচিবসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়েছে।
বুধবার সকালে আদালত সূত্রে জানা গেছে, বিচারক মোঃ ইফতেখারুল ইসলাম মামলা দায়েরের জন্য আবেদনটি গ্রহণ করে পরবর্তী আদেশের জন্য রেখে দিয়েছেন। এর আগে বরিশালের যুগ্ম জেলা জজ তৃতীয় আদালতে মঙ্গলবার শেষ কার্যদিবসে মামলা দায়েরের জন্য আবেদনটি করেন গত ২১ জুন জেলার হিজলা উপজেলার মেমানিয়া ইউপি নির্বাচনে ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করা আবদুল লতিফ মৃধা।
মামলার আবেদনে আরও অভিযুক্ত করা হয়েছে, মেমনিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিজয়ী ইউপি সদস্য মনির হোসেন চৌকিদার, অপর প্রার্থী দুলাল হোসেন, বরিশাল অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, হিজলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, রিটার্নিং কর্মকর্তা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, মেমানিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও সচিবকে।
বাদীর আইনজীবী আজাদ রহমান সাংবাদিকদের জানান, গত ২১ জুন হিজলার মেমানিয়া ইউনিয়নের ভোটে ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য পদে ফুটবল প্রতীক নিয়ে অংশগ্রহণ করেন মনির হোসেন চৌকিদার, টিউবওয়েল প্রতীকে দুলাল হোসেন ও মোরগ প্রতীক নিয়ে আবদুল লতিফ মৃধা।
তিনি (লতিফ মৃধা) অভিযোগ করেন, প্রার্থীদের মধ্যে মনির হোসেনের জনসমর্থন না থাকলেও বিত্তশালী ও প্রভাবশালী হওয়ায় নির্বাচনে জিততে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে বেআইনিভাবে ম্যানেজ করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৭ জুন আবুল ঢালীর বাড়ির মল্লিক-ই-এবতাদায়ী মাদরাসা ভোটকেন্দ্রে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা সৈয়দ আল-আমিনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এ সময় আবদুল লতিফ আপত্তি জানালে ১৯ জুন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে মহিষখোলা ফাজিল মাদরাসার প্রভাষক কামাল উদ্দিনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে ২০ জুন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে সৈয়দ আল-আমিনকে বহাল রাখা হয়।
আইনজীবী আজাদ বাদির অভিযোগের বরাত দিয়ে আরও বলেন, ভোটেরদিন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আল-আমিন প্রকাশ্যে প্রশাসন ও তার সহযোগিদের নিয়ে মনির হোসেনের পক্ষে কাজ করেন। তারা অন্য প্রার্থীর এজেন্টদের কৌশলে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছেন। মোরগ প্রতীকের প্রার্থী আবদুল লতিফ এ সময় প্রতিবাদ করলে তাকেও মারধর করা হয়। পরে ফুটবল প্রতীকে সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভর্তি করা হয়। আবদুল লতিফ ফের প্রতিবাদ করলে দুইঘণ্টা ভোট বন্ধ রাখা হয়।
এরমধ্যে তিনি (লতিফ) অসুস্থ হয়ে পরলে তাকে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হলে দুই ঘণ্টা পর জনশূন্য কেন্দ্রে ভোট নিয়ে অন্য প্রার্থীদের অনুপস্থিতিতে ফুটবল প্রতীকের প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এ ঘটনায় আবদুল লতিফের পুত্র সোহাগ মৃধা নির্বাচনের সব অনিয়ম উল্লেখ করে হিজলা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। পরবর্তীতে আবদুল লতিফ মৃধার অবস্থার অবনতি হলে তাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি (লতিফ) শেবাচিমে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।