চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি-রফতানিমুখী সব পণ্যই স্ক্যানিং ব্যবস্থার আওতায় আনা হচ্ছে। মূলত আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন নিরাপদ বন্দরব্যবস্থা গড়ে তুলতেই এমন উদ্যোন নেয়া হয়েছে। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে শুধুমাত্র আমদানি পণ্যবাহী কনটেইনার অভিবীক্ষণ (স্ক্যানার) যন্ত্র দ্বারা পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকলেও রফতানি পণ্যের ক্ষেত্রে তা নেই। বর্তমানে বাংলাদেশ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে চুক্তির আওতায় এবং বৃহৎ রফতানি সহযোগী দেশ যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বন্দরে পূর্ণাঙ্গ স্ক্যানিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, আন্তর্জাতিক জাহাজ ও বন্দর নিরাপত্তা কোড (আইএসপিএস), ইউএস কনটেইনার ইনিশিয়েটিভ (সিএসআই), জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বন্দর নিরাপত্তা সংস্থার চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে চট্টগ্রাম বন্দরকে আধুনিক ও দক্ষ প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। সেক্ষেত্রে বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং সরকারের কাস্টমস বিভাগ সমন্বিতভাবে কাজ করার মাধ্যমেই আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বন্দর গড়ে তোলা সম্ভব।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বন্দরের অভ্যন্তরীণ পরিবেশ ও জেটি সম্মুখস্থ রিভার সাইডসহ বন্দর চ্যানেল ব্যবস্থা সুরক্ষায় বন্দর কর্তৃপক্ষের মূল দায়িত্ব। আর পণ্যের আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে গুণগত মান ও নিরাপদ বিষয়ে পরীক্ষাসহ শুল্ক আদায়ে দায়িত্ব পালন করে কাস্টমস। বাস্তব অবস্থা বিবেচনা করেই উভয় সংস্থা তাদের দায়িত্বসমূহ যথাসম্ভব পালন করে আসছে। কিন্তু জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নিয়ন্ত্রণাধীন কাস্টমস কর্মকা-ের অংশ হিসেবে স্ক্যানার স্থাপন ও তার দ্বারা যথাযথ পণ্যের পরীক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার মান ও দক্ষতায় এখনো পুরোপুরি উত্তীর্ণ নয়। ওই পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বন্দরে অধিকাংশ গেট দিয়ে কনটেইনারবাহী সব আমদানি-রফতানি পরীক্ষার জন্য স্ক্যানার স্থাপন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে ৭টি স্ক্যানার মেশিন রয়েছে। তার মধ্যে দুটি মোবাইল স্ক্যানার। বাকি স্ক্যানারসমূহ ৫টি গেটে স্থাপন করা আছে। সেগুলো মূলত আমদানি পণ্য স্ক্যানার করে থাকে। অথচ চট্টগ্রাম কাস্টমস থেকে দীর্ঘদিন ধরে বন্দরের অন্তত ১২টি গেটে ১২টি স্ক্যানিং মেশিন স্থাপনের দাবি করা হচ্ছে।
এদিকে এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম কাস্টমসের কমিশনার মোহাম্মদ ফখরুল আলম জানান, এনবিআর থেকে ৪টি এবং চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ২টি স্ক্যানার পেলে চট্টগ্রাম কাস্টমসের মোট ১৩টি স্ক্যানার দিয়ে মোটামুটি পূর্ণাঙ্গভাবে আমদানি ও রফতানি পণ্যের স্ক্যানিং করা সম্ভব হবে। তাতে করে কাস্টমসের কাজের সুবিধা বৃদ্ধি পাবে এবং ব্যবসায়ী সংগঠনের দীর্ঘদিনের দাবিরও সুরাহা হবে।
অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ শাহজাহান জানান, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক দুটি স্ক্যানার কেনার মূল উদ্দেশ্য হলো তার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক জাহাজ ও বন্দর নিরাপত্তা কোড (আইএসপিএস) বাস্তবায়নের পথ সুগম হবে। একই সঙ্গে বন্দরের দেয়া দুটি স্ক্যানারের মাধ্যমে কাস্টমস রফতানিমুখী পণ্যবাহী কনটেইনারের স্ক্যানিং করার ক্ষেত্রে আরো এক দাপ এগিয়ে যাবে।