চলছে লক ডাউন, বেশির ভাগ সময় লক ডাউনের কার্যক্রমে প্রশাসন ব্যস্ত সময় পার করছে। ফলে প্রশাসন না আসার সুযোগে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার ভোগাই নদী হতে বালু খেকোরা দেদারচে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। বালু খেকোরা দুএকদিন রাতের বেলায় বালু তুলেছে, এখন প্রকাশ্যে দিনের বেলাতেই তুলতে শুর করেছে। আবার প্রশাসনের অভিযানের কোন খবর পেলে ১০ মিঃ এর মধ্যে তারা সব সরাতে সক্ষম। এদিকে প্রশাসন অভিযানে নামলেও হাতে নাতে ধরাটা তাদের পক্ষে কঠিন হয়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। তাই তাদের ধরাটাই এখন অধরা হয়ে দাড়িয়েছে।
বিগত সময় বালু উত্তোলনের ফলে নদীর অন্তত ২০টিরও অধিক জায়গায় পাড় ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এবারও এর ভয়াবহতা আরো বেড়েছে। অপরিকল্পিত ভাবে ও নিয়মের বাইরে গিয়ে বালু উত্তোলন কার্যক্রম আরো জোড়ে শোরে বেড়েছে। নদী ও মানুষের সম্পদ রক্ষার্থে এলাকাবাসী প্রশাসনের সরাসরি যখন তখন তাৎক্ষনিক হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন।
সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি বন্যার পানি নেমে গেছে। এসেছে নতুন বালু। নতুন বালু আর নুড়ি পাথরে সঞ্চারিত হয়েছে নদীর প্রান। ইতি পূর্বে নদীর বুক চিরে পুরাতন গভীর খাদ গুলি কিছু বালু আর পলিতে কিছুটা পূরন হয়েছে। নদী কিছুটা প্রাকৃতিক ভারসাম্য ফিরে পেয়েছে। এবস্থায় বালু খোকোদের নজর পড়েছে সেই দিকে। চলছে লক ডাউন, স্থানীয় প্রশাসন ব্যস্ত থাকায় বালু খেকোদের বালু উত্তোলন কার্যক্রম ও বালু বিক্রির মহোউৎসব লেগেছে। বাঁশ, দড়ি, সেলু ইঞ্জিন, পাইপ আর প্লাষ্টিক ড্রামের চাহিদা এখন ব্যপক। এগুলি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে বালু খেকোরা। জোড়া লাগিয়েই একের পর এক মেশিন নদীতে ফেলছে লোডারবৃন্দ। স্বাস্থ্য বিধির বালাই নেই, জীবনের কোন হিসাবও নেই। কোন কিছুই তোয়াক্কো করছে না তারা। দিনে রাতে সেলু মেশিনের ইঞ্জিন চালু করে দেদারচে তুলে নিচ্ছে বালু। বিশেষ করে নাকুগাঁও ব্রীজের পর হতেই দেখা মিলবে সেলু ইঞ্জিন ও ড্রামের পাইপ লাইন। শনিবার ১০ জুলাই সকাল হতে কালাকুমা, হাতিপাগাড়, নয়াবিল ব্লকপাড় হয়ে ঘাকপাড়, নয়াবিল বাজার হয়ে নয়াবিলের দক্ষিন পর্যন্ত অন্তত শতাধিক মেশিন চালু করেছ্ েবালু খেকোরা। উঠছে মেশিনে নদীর প্রান সঞ্চারিত নতুন নুড়ি পাথর আর বালু। দিনের বেলাতেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে এসব বালু। রাতের বেলায় দুচারটির অধিক ট্রাক ভর্তি বালু এ পথেই পার হয় বলে জানা গেছে। কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে এক শ্রেনীর ব্যবাসায়ীরা এসব কার্যক্রম করে যাচ্ছে। এই ঘটনার খবর পেয়ে ১০ জুলাই শনিবার রাতেই উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা হেলেনা পারভিন পুলিশ নিয়ে ঝটিকা অভিযানে নামলে বালু খেকোরা প্লাষ্টিক ড্রামের উপড় বসানো মেশিন দ্রুততম সময়ে বন্ধ করে পাইপ লাইন সরিয়ে ঘাপটি মেরে গোপন জায়গায় সরে থাকে। প্রশাসন চলে গেলে পরে আবার তারা স্বাভাবিক কার্যক্রম চালাতে থাকে। একজনের কাছে কোন রকমে খবর গেলে বাকিরা তাদের কাছে এই খবর মোবাইলে দিয়ে দেয়। ব্যবসার জায়গায় বালু ব্যবসসায়ীরা সবাই একই। প্রশাসনের অভিযানে বালু খেকোরা এভাবেই গ্রহন করছে নতুন নতুন কৌঁসুলি কার্র্যক্রম। ফলে তাদের ধরাটাই এখন অধরা হয়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
এব্যাপারে নয়াবিল ইউপি চেয়ারম্যান ইউনুছ আলী দেওয়ান বলেন, কিছু অবৈধ বালু কারবারীরা এসব কাজ করে যাচ্ছে। নদী হতে বালু সরে যাওয়ায় এতে করে নদীর পাড় ভেঙ্গে এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। অপর দিকে নদীর অনেক চর আছে সেটি সরকারী ভাবে পরিকল্পিত কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে এসব চর প্রশাসন সরাতে পারে। এতে করে রাজস্ব আদায়ও হবে এবং নদী ভাঙ্গনও রক্ষা পাবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হেলেনা পারভীন বলেন, আমরা অভিযানে নামলেই এগুলি সরিয়ে নেয় তারা। অতি শীগ্রই অভিযান কার্যক্রম শুরু হবে।