সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ২১ বছর পরে সাড়ে ৩ হাজার বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ হচ্ছে। এলাকাবাসীর সযোগিতায় কলারোয়া পৌর সদরের মুরারীকাটি গ্রামের ৭নং ওয়ার্ডে ডুবে থাকা বিলের পানি ১মাস ধরে সেচ দিয়ে সেখানে রোপন করা হয়েছে আমন ধান। বর্তমানে ওই মাঠে সেচের কাজ চলমান রয়েছে। গতকাল রোববার (২৫জুলাই) সকালে সরেজমিনে এলাকা ঘুরে দেখা গেছে,পৌর সদরের মুরারীকাটি গ্রামের ৭নং ওয়ার্ডে প্রায় সাড়ে ৩হাজার বিঘা ধান চাষের জমি রয়েছে। সেই জমিতে বর্ষা মৌসুমে পানি জমে থাকায় ধান চাষ করতে পারেনি জমির মালিক (চাষিরা)। ২০০০ সালে বন্যার পর থেকে অদ্যাবধি আমান ধান চাষ করতে পারেনি চাষিরা। দীর্ঘ ২১বছর পরে মুরারীকাটি গ্রামের ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর হোসেন ও পৌর আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলামের আর্থিক সহযোগিতায় ওই ওয়ার্ডে ১২সদস্য বিশিষ্ট একটি পানি সেচ কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির সভাপতি হলেন-আরিজুল মোড়ল, সাধারণ সম্পাদক হলেন-আব্দুর রাজ্জাক গাজী। তাদের নেতৃত্বে গত ১মাস ধরে ওই মাঠের পানি সেচ দিয়ে জমিতে ধান চাষ করা হচ্ছে। মাঠে চলছে ধান রোপনের মাহা উৎসব। পাল্লা-পাল্লি দিয়ে চলছে ধান রোপন। বর্তমানে মাঠটি দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। এ বিষয়ে পৌর কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর হোসেন জানান-২০০০সাল থেকে ৭নং ওয়ার্ডবাসী মাঠে আমন ধান চাষ করতে পারিনি। তিনি চাষীদের মুখের দিকে তাকিয়ে আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে পানি সেচের ব্যবস্থা করেছেন। পৌর আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম জানান, ২১বছর ধরে মুরারীকাটি গ্রামের সাড়ে ৩হাজার বিঘা জমিতে পানি জমে থাকায় চাষীরা ধান চাষ করতে পারিনি। এবিষয় নিয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি। তিনি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন এর সাথে কথা বলে পানি নিষ্কাশনের জন্য ২লাখ টাকার বরাদ্ধ নেন। সেই টাকা দিয়ে ১শ, ৮৬ফুট ড্রেন করেন। এর পরে তালা-কলারোয়ার সংসদ সদস্য এড.মুস্তফা লুৎফুল্লার সাথে পরামর্শ করে আরো ৩লাখ টাকার বরাদ্ধ নেন। সেই টাকা দিয়ে তিনি পানি নিষ্কাশনের জন্য ৪শ’৮৬ফুট ড্রেন করেন। এ ছাড়া নিজেদের উদ্যোগে ৪শ’৪০ফুট ড্রেন ও ৩শ’১৪ফুট পাইপ ও একটি জল মোটর ক্রয় করেন। বর্তমানে এই কাজ করতে গিয়ে তাদের প্রায় ৯লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এদিকে ওই ওয়ার্ডের কৃষক নুরুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, ইমাদুল ইসলাম, আমিনুর রহমান, বেনজির রহমান, আঃ রশিদ বাবু, আঃ করিম, আব্দুল্লাহ জিয়াদ, জয়নুদ্দিন, বাচ্চু জানান-এত বছর পরে মাঠে ধান করতে পেরে তারা মহা খুশি। চাষীরা পৌর কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর হোসেন ও পৌর আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলামকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন মহাৎ কাজের জন্য। এ বিষয়ে ওয়ার্ড আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক মীরশাদ আলী জানান-দীর্ঘ দিন পরে এই উদ্যোগ নেয়ার জন্য তিনি মহা খুশি। আর এই কাজে যারা সহযোগিতা করছেন তাদেরকে তিনি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। ২০০০সালের বন্যার পরে ৭/৮নং ওয়ার্ডবাসী এক সাথে এবার মাঠে ধান চাষ করতে পারছেন। এদিকে এড.মুস্তফা লুৎফুল্লাহ এমপি বলেন, কলারোয়া পৌর আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম তার এলাকার মানুষের জন্য কিছু করে দেখাতে চান। সে জন্য তিনি এমপির কাছে গিয়ে এলাকার মানুষের দুর্দশার কথা কথা খুলে বলেন। এমপি মহোদয় তার সরল কথা শুনে ৩লাখ টাকার বরাদ্ধ দেন। সেই টাকা নিয়ে শহিদুল ইসলাম এলাকার কৃষকদের জন্য কাজ করে চমক লাগিয়ে দিয়েছেন। যা তিনি ঢাকায় বসে ইতোমধ্যে জানতে পেরেছেন। উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন বলেন-শহিদুল ইসলাম নিজের জন্য নয়। পরের জন্য নিজের জীবণও দিতে পারেন। আমি যখন উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলাম তখন আমার কাছে গিয়ে বলেন ভাই আমি নিজের জন্য নয় এলাকার শত শত কৃষকদের কথা বলতে চাই। ২০০০সাল থেকে আমার ৭নং ওয়ার্ডের মাঠে পানি জমে থাকায় কৃষকরা ধান চাষ করতে পারছে না। আপনি যদি কিছু বরাদ্ধ দেন। সেই টাকা দিয়ে ড্রেনেজ ব্যবস্থা করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হবে। সেই থেকে লেগে রয়েছে শহিদুল ইসলাম। আজ সফল হয়েছে। আমরা উপজেলা আ.লীগের পক্ষ থেকে শহিদুল ইসলামকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।