আততায়ীদের হাতে নিহত দিঘলিয়ার পথেরবাজারের ব্যবসায়ী ইয়াসিন শেখের জানাজা নামাজ ২৬ জুলাই বাদ আসর চন্দনীমহল বোগদিয়া প্রাইমারী স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত হয়।
জানাযায় পথেরবাজারের ব্যবসায়ীগণসহ এলাকার শত শত মানুষ অংশগ্রহণ করেন। এর আগে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ময়না তদন্ত শেষে তাঁর মরদেহ উঃ চন্দনীমহল (বোগদিয়া) গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে তাঁর স্বজনদের কান্নায় আকাশ বাতাস ভারী হয়ে ওঠে।
এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানা যায়, নিহত ইয়াসিন শেখ (৪২) এর পিতার নাম নিজাম শেখ। নিজাম শেখ ওই এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা না হলেও ইয়াসিন শেখের জন্ম এবং বেড়ে ওঠা উঃ চন্দনীমহল গ্রামে। ওই গ্রামের গাজী পাড়ায় তাঁর মামা বাড়ি। ছোট বেলা থেকে ইয়াসিন খুবই ভদ্র এবং শান্ত প্রকৃতির ছিলো। এলাকার কারোর সংগে তাঁর কোন শত্রুতা ছিল না। বিদেশ ফেরত ইয়াসিন গত ৮/১০ বছর থেকে পথেরবাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ছিলেন। গত ১০ মার্চ ঐ বাজারের বনিক সমিতির ত্রি- বার্ষিক সাধারণ নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন করে হেরে যান। এর আগেও তিনি একবার পথেরবাজার বনিক সমিতির নির্বাচনে কোষাধ্যক্ষ পদে নির্বাচন করেছিলেন। চন্দনীমহল সাংগাঠনিক ইউনিয়ন ৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এবং স্থগিত হওয়া সেনহাটী ইউপি নির্বাচনে আওয়ালীগ মনোনীত প্রার্থী ফারহানা হালিমের একজন সমর্থক ছিলেন।এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ৩মাস আগে এ এলাকার একটা পক্ষের হামলায় গুরুতর আহত হন। তিনি এখনও শয্যাশায়ী। এ ঘটনায় এলাকায় সংঘটিত সংঘর্ষে ৩০/৩৫ জন আহত হয়।উভয় পক্ষে মামলা হয়।অনেকে গ্রেফতারও হয়। এখনও ২পক্ষের মামলা চলমান। ঘটনার পর থেকে অশান্ত এলাকায় শান্ত পরিবেশ বিরাজ করছিল। ঠিক এ সময় এলাকায় এধরণের একজন শান্ত প্রকৃতির লোককে কোন ভালো লোকে হত্যা করতে পারেনা। এলাকার আধিপত্য বজায় রাখা ও প্রতিপক্ষকে মামলায় ফাঁসানো এ হত্যাকা-ের মোটিভ হতে পারে এলাকার বিজ্ঞমহলের ধারণা।
ইয়াসিনের স্ত্রী খাদিজা বেগম জানান, আমার নিষ্পাপ স্বামী কে মেরে ফেলেছে। ৪ ছেলে মেয়ের কি হবে বলে চিৎকার করছিলেন। ইয়াসিন শেখের ছোট ছেলে তামিমের বয়স ৫ বছর। ২৫ জুলাই রাতে দুর্বৃত্তরা তাঁর বাড়ি (বোগদিয়া) থেকে ডেকে নিয়ে রাত আনুমানিক সাড়ে ১০ টার দিকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তাঁকে হত্যা করে চন্দনীমহল গাজী পাড়ায় ফেলে রেখে যায়। পরে আত্মীয়স্বজন খবর পেয়ে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। ঘটনার দিন রাতেই খুলনা এএসপি সার্কেল রাজু আহম্মেদ, দিঘলিয়া থানা কর্মকর্তা ইনচার্জ মোঃ আহসান উল্লাহ চৌধুরী ও ওসি(তদন্ত) রিপন সরকার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে।
ওসি (তদন্ত) রিপন কুমার সরকার জানান, “তিন মাস পূর্বে ইয়াসিন শেখের মামা শাহজাহান গাজী ও হামলার শিকার হয়ে মারাত্মক আহত হন। ঐ ঘটনায় তিনি এখনও শয্যাশায়ী হয়ে আছেন এবং আর্থিকভাবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হন। এ ঘটনার জের ধরে হত্যাকান্ডটি সংঘটিত হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনার সংগে জড়িত সন্দেহে আজ ২৬ জুলাই চন্দনীমহল গ্রাম থেকে সানী (১৯) নামে এক যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।” এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছিল।