খুলনা জেলার দিঘলিয়া উপজেলার চন্দনীমহল গ্রামে ব্যবসায়ী যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা গ্রহনে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনে নিহত ইয়াছিনের মা ও মামলার বাদী হাফিজা বেগম খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
২৮ জুলাই দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে মামলার বাদী অভিযোগ করেছেন গত ২৭ জুলাই ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে একটি এজাহার দায়ের করেন। মামলা শেষে বাড়ি ফেরার পথে পুলিশ তার কাছ থেকে সাদা কাগজে সাক্ষর করিয়ে রাখে। পরবর্তীতে বাড়িতে ফিরে জানতে পারেন ১৫ জন কে আসামি করে মামলা হয়েছে এবং যাদের সাক্ষী করা হয় তাদের নাম ও বদলে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন থানা পুলিশের এত বড় প্রতারণা দেখে আমি শংকিত হয়েছি। এখন মনে হচ্ছে আমি সন্তান হত্যার বিচার পাবো বলে মনে হয় না। আমি প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ প্রধানের নিকট সন্তান হত্যার সুবিচার দাবি করছি।
অপরদিকে পুলিশের দাবি, ইয়াছিন শেখ হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে। নিহত ইয়াসিন শেখের আপন মামা শাহজাহান গাজীর ওপর পূর্বের হামলার প্রতিশোধ নিতেই খুন করা হয় দিঘলিয়ার ব্যবসায়ী ইয়াসিন শেখ কে। হত্যাকান্ডে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে ২৮ জুলাই বিকালে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে এ মামলার আসামি সানি (১৯)। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মনিরুজ্জামানের আদালতে সে এই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে। গ্রেফতারকৃত সানি (১৯) একই এলাকার বাবুল খাঁর পুত্র।
দিঘলিয়া থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) রিপন কুমার সরকার বলেন ,গত মঙ্গলবার সানিকে দিঘলিয়া থেকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিতে চাইলে তাকে আদালতে উপস্থিত করা হয়। সানি হত্যাকান্ডের ব্যাপারে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এবং আসামীদের গ্রেফতারের স্বার্থে সব এই মুহূর্তে প্রকাশ করা যাবে না। তবে হত্যাকান্ডে জড়িত অনেকের ব্যাপারে তথ্য দিয়েছে সানি। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। এই হত্যা মামলার তদন্তের দায়িত্বে রয়েছেন এস আই সঞ্জীব সাহা।
মামলার বাদী হাফিজা বেগম এর অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে ইন্সপেক্টর (তদন্ত) রিপন কুমার সরকার বলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ‘ ক ‘ সার্কেল রাজু আহমেদ এর উপস্থিতিতে স্বচ্ছতার সাথে মামলা গ্রহন করা হয়েছে এবং দ্রুততম সময়ে একজন আসামি সানী (১৯) কে আটক করা হয়েছে। মামলার বাদী অন্য কারোর প্ররোচনায় মনগড়া কথা বলছেন। এই মামলায় বাকি আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।
উল্লেখ্য যে, ইয়াসিনের মামার সাথে বিরোধ ও তার উপর হামলা ও তাকে অচল করে দেওয়ার ঘটনার জেরে খুন হয় ইয়াসিন। ২৫ জুলাই ইশার নামাজের পর দুর্বৃত্তরা ভিকটিমকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ডেকে নিয়ে আসে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন যখম করে। মুমূর্ষ অবস্থায় তাকে চন্দনীমহল গাজী পাড়ায় ফেলে যায়। পরে রাত সাড়ে ১০ টার দিকে নিহতের স্বজনরা খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঐদিন রাতেই পুলিশ সানিকে আটক করে।