গণমাধ্যমে প্রকাশিত বৃদ্ধের শরীরে সংসদ সদস্যের (এমপি) টিকা প্রয়োগ এবং বাসায় বসে অপ্রশিক্ষিত কর্মীর কাছে উপজেলা চেয়ারম্যানের টিকা গ্রহণের ঘটনায় রাজশাহীর দুই উপজেলার প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে (টিএইচও) শোকজ করা হয়েছে। বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদারের নির্দেশনা অনুযায়ী জেলার সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুকদার তাঁদের শোকজ করেছেন। তাঁরা হলেন- বাগমারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. গোলাম রাব্বানী এবং তানোরের ডা. বার্নাবাস হাসদাক।
এর আগে টিএইচও ডা. গোলাম রাব্বানীর উপস্থিতিতে গত শনিবার রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের এমপি ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক নিজ হাতে করোনাভাইরাসের টিকা এক বৃদ্ধের শরীরে পুশ করে গণটিকা কার্যক্রমের উদ্বোধনের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের নজরে আসায় প্রশিক্ষিত না হয়েও ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক কীভাবে টিকা পুশ করলেন সেই ব্যাখা দিতে টিএইচও ডা. গোলাম রাব্বানীকে শোকজ করা হয়েছে।
আর গত মঙ্গলবার উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশীদ ময়না তানোর উপজেলা পরিষদের সরকারি বাসভবনে বসে টিকা নেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যকর্মী জহির উদ্দিন ও পুটার মো. নাসিম গিয়ে তাঁকে টিকা দিয়ে আসেন। এভাবে কাউকে বাসায় গিয়ে টিকা প্রয়োগ করার সুযোগ নেই। আবার স্বাস্থ্যকর্মী জহির উদ্দিন না দিয়ে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী নাসিম উপজেলা চেয়ারম্যানের শরীরে টিকা প্রয়োগ করেন। নাসিমেরও এ ব্যাপারে কোনও প্রশিক্ষণও নেই। এ বিষয়টিও গনমাধ্যমে প্রকাশ হলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের নজরে পড়ে। ফলে কারণ জানতে তানোরের টিএইচও ডা. বার্নাবাস হাসদাককেও শোকজ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ডা. বার্নাবাস হাসদাক বলেন, ‘সিভিল সার্জন স্যারের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি আমার কাছে ব্যাখা চেয়ে একটা চিঠিও পাঠিয়েছেন। তবে আমি রাজশাহীর বাইরে থাকায় এখনও চিঠিটি দেখিনি।’
আর শোকজের বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি বাগমারার টিএইচও ডা. গোলাম রাব্বানী।
শোকজ করার বিষয়টি নিশ্চিত করে রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুকদার বলেন, ‘দুটি ঘটনার ব্যাপারেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ মুহুর্তে এর বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।’
এ বিষয়ে রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার বলেন, ‘দুই উপজেলার দুটি ঘটনা আমার দৃষ্টিতে আসার পর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সিভিল সার্জনকে বলে দিয়েছি। তিনি শোকজও করেছেন। আশা করছি দু’একদিনের মধ্যে লিখিত ব্যাখা পেয়ে যাব। প্রাপ্ত ব্যাখ্যার ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’