ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পদ্মা নদীর অপর পারের চর হরিরামপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন চরাঞ্চলে গত দেড় মাস ধরে বহাল তবিয়তে চলছে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের মহোৎসব। ড্রেজার মালিকরা নদীনালা খাল বিল ও ফসলী মাঠ গভীর গর্ত করে চালিয়ে যাচ্ছে রমরমা বালু বানিজ্য। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে বার বার অবগত করার পরও অবৈধ ড্রেজার মেশিনগুলো বন্ধ হয় নাই বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে চলমান বর্ষা মৌসুমে পদ্মা নদীর তীব্র ভাঙনের শঙ্কা প্রকাশ করে চলেছেন চরবাসী। বুধবার ওই চরের এক কৃষক আবুল কালাম জানান “ এ বছর বর্ষা মৌসুমে চরাঞ্চলের ফসলী মাঠে যেভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন হচ্ছে তাতে বন্যাকালিন সময়ে তীব্র ভাঙনের সম্ভাবনা রয়েছে”।
উপজেলার চরহরিরামপুর ইউনিয়নের পদ্মা চরে চলমান অবৈধ ড্রেজার মেশিনগুলোর মধ্যে- হাজার বিঘা চরের আঃ হাই খান হাটের পাশে মোস্তাক আহাম্মেদ (৪৫) এর ড্রেজার মেশিন, আলমাস বেপারী (৪০) এর ড্রেজার শেখ মোস্তফা (৩৫) এর ড্রেজার, শেখ ছগির (৪৪) এর ড্রেজার মেশিন। এ ছাড়া চরশালেপুর গ্রামের আমিনখার হাটের পাশে চলমান রয়েছে ফেরদৌস খান (৪৫) এর ড্রেজার মেশিন, শেখ আঞ্জু (৫৫) এর ড্রেজার মেশিন, শেখ জাহাঙ্গীর (৪২) এর ড্রেজার মেশিন। পার্শ্ববতী বৈদ্য ডাঙ্গী ও রমেশ বালার ডাঙ্গী গ্রামে চলমান রয়েছে শেখ হাবিব (৩৫) এর ড্রেজার মেশিন। এ ছাড়া ওই পদ্মা চরের আনাচে কানাচে ঝোপঝাড়ের আড়ালে লুকিয়ে থেকে অনেক ড্রেজার মালিক চরাঞ্চলে বসতভিটে বাঁধা বাণিজ্য করে চলেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পদ্মা চরের এক ড্রেজার মালিক জানায়, “ উপজেলা চরাঞ্চলে চলমান ড্রেজার মালিকদের মধ্যে ফেরদৌস খান (৪৫) এর সাইড ব্যবসা আছে। সে ক’বছর আগে ইয়াবা ট্যাবলেট সহ গ্রেফতারও হয়েছিল। ফেদৌস খান এখন প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ড্রেজারে বালু উত্তোলন ব্যবসা করে চলেছে। ওই ড্রেজার মালিক আরও জানায়, প্রশাসন ম্যানেজ করার জন্য মাত্র কয়েকদিন আগে ভিন্ন তৃতীয় পক্ষর মাধ্যমে তার কাছ থেকেও নগদ ১০ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। এ অবস্থায় সে ড্রেজার মেশিন চালাতে না পারলে সুদ করে আনা ঘুষের টাকা পরিশোধ করার জন্য তার ড্রেজার মেশিনটাই বিক্রি করতে হবে”।
এ ব্যপারে বুধবার উপজেলার চরহরিরামপুর ইউনিয়ন সহকারী ভুমি কর্মকর্তা (তহশিলদার) আবুল বাসার চৌকদার জানান, “ আমি বহুবার ওই চরে গিয়ে ড্রেজার মেশিন মালিকদের বালু উত্তোলন করতে নিষেধ করেছি। কিন্তু তারা কোনো বিধি নিষেধ তোয়াক্কা না করে বহাল তবিয়তে ড্রেজারে বালু উত্তোলন করে চলেছে। এখন আমি আর কি করতে পারি”। আর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অ.দা) মোঃ মাসুম রেজা বলেন, “ আমি কিছুদিন আগে ড্রেজার মেশিনগুলো বন্ধ করার জন্য চারঞ্চলে তহশিলদারকে পাঠিয়েছিলাম। মাত্র দু’দিন বন্ধ রাখার পর ড্রেজার চালকরা আবার চালু করেছে। আমি আবারও ব্যবস্থা নেবো ”।