শরীয়তপুর সদর উপজেলার আংগারিয়া ইউনিয়নের খায়েরচর পশ্চিম পরোসুদ্দি গ্রামের আঃ জব্বার তালুকদার সখের বশবতি হয়ে প্রায় ১২ লাখ টাকা খরচ করে বাইচের জন্য একটি বাচারী নৌকা তৈরী করেছেন। ৬ জন মিস্ত্রির নৌকাটি তৈরী করতে সময় লেগেছে প্রায় দেড় মাস। এ নৌকার প্রধান মিস্ত্রি ছিলেন, হরবিলাস। আর এ নৌকাটি লম্বা প্রায় ১১০ হাত। বৃহত্তর ফরিদপুরের মধ্যে এ নৌকাটি সবচেয়ে বড় হতে পারে বলে দাবী করেন, নৌকার মালিক আঃ জব্বার তালুকদার। এ নৌকার দু’মাথায় পিতলের গহেনা দিয়ে সাজানো হয়েছে। দেখতে অনেক চমৎকার লাগে। নৌকাটি দেখতে দূর দুরান্ত থেকে শতশত নারী-পুরুষ প্রতিদিন ভিড় করে। নৌকার দু’পাশে ৭২ জন মাল্লারা (বাইছা) বৈঠা টানে। আর নৌকায় দু’জন লোক সব সময়ই গান বাজ করতে থাকে এবং এই তালে তালে নৌকাটি চালিয়ে যায়। এদিকে, সম্প্র্রতি শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ইকবাল হোসেন অপু ওই বাচারী নৌকা পরিদর্শন ও উদ্বোধন করেন। এ সময় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এখন থেকে নৌকাটি বিভিন্ন এলাকায় নৌকা বাইচে অংশগ্রহণ করবে। তাই এর প্রস্তুত করা হয়েছে। এ উপলক্ষে শুক্রবার (২৭ আগস্ট) বেলা ১১ টায় আংগারিয়া’র নতুনহাটের কীর্তিনাশা নদীর তীরে দোয়া ও মিলাদ পড়ে এ নৌকার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, আংগারিয়া ইউনিয়নের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম সরদার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ হাবিবুর রহমান, এ্যাড. এনামূল হক এনাম, শরীয়তপুর সদর উপজেলা যুবলীগের সহ-সম্পাদক কাজী শাহিন, সহ-সম্পাদক বাচ্চু হাওলাদার, আংগারিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারন সম্পাদক মজিবুর রহমান সরদার, সহ-সভাপতি শাহাদাত হোসেন হাওলাদার, হাজী আঃ মালেক সরদার, ফজলে সরদার, নজরুল ইসলাম হাওলাদার, ওয়ার্ড যুবলীগের সহ-সভাপতি জয়নাল সরদার, যুগ্ম-সম্পাদক আক্তার শাহ প্রমূখ।
এব্যাপারে যুবলীগ নেতা কাজী শাহিন ও মজিবুর রহমান সরদার বলেন, আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা আনন্দ মুখর করে তুলতে এই নৌকা প্রস্তুত করা। নৌকা প্রস্তুতকে কেন্দ্র করে এলাকায় শতশত মানুষের মিলন মেলা। এ যেন একটি উৎসব। আংগারিয়া ইউনিয়ন ও শরীয়তপুর জেলা সহ আশপাশের এলাকার বিভিন্ন বয়সের শতশত মানুষ নৌকা দেখার জন্য উৎসবে মেতে নির্মল আনন্দ উপভোগ করে।
এব্যাপারে নৌকার মালিক আঃ জব্বার তালুকদার বলেন, বাঙ্গালীর হাজার বছরের কৃষ্টি কালচার ধারণ করতেই আমরা নৌকা বাইচের আয়োজন করে থাকি। ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ ধরে রাখতেই অমাদের উদ্যোগ অব্যাহত রাখবো। সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষ এই নৌকা বাইচ উপভোগ করবে। নান্দনিক এ নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা বিপুল আড়ম্বরপূর্ণ।
এব্যাপারে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক জাহাঙ্গীর আলম সরদার বলেন, আমাদের এলাকায় বহু বছর আগে বিল এলাকার মানুষ চিত্ত বিনোদনের জন্য নৌকা দিয়ে নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করতো এ থেকে এটি প্রচলিত হয়। সে ঐতিহ্য এখনো চলছে। বাইচ থেকে এলাকার মানুষ নির্মল আনন্দ উপভোগ করে।