দিনাজপুরে ইয়াসমিন ট্রাজেডির গণ আন্দোলনের ২৬ বছর পূতি ২৭ আগস্ট। তৎকালীন বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন শহরে কতিপয় বিপথগামী পুলিশ কর্তৃক কিশোরী ইয়াসমিন ধর্ষিত ও হত্যার শিকার হওয়ার প্রতিবাদী জনতার মিছিলের উপর পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলে সামু, কাদের ও সিরাজসহ সাতটি তাজা প্রাণ ঝরে পড়ে। রক্তে রঞ্জিত হয় রাজপথ।
দিবসটি স্মরণে প্রতিবছরের ন্যায় গতকাল ২৭ আগস্ট শুক্রবার সকালে কাহারোল উপজেলার দশমাইল পূর্ব সাদিপুর উচ্চবিদ্যালয়ের শহীদ ‘সামু-কাদের-সিরাজ’ অ্যাকাডেমিক ভবনে শহীদ ‘সামু-কাদের-সিরাজ’ স্মরণে স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ইয়াসমিন ধর্ষন ও হত্যার প্রথম প্রতিবাদকারী নেতা ও সাংসদ মনোরঞ্জন শীল গোপাল।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমপি মনোরঞ্জন শীল গোপাল বলেন, বাংলাদেশে প্রতিবছর ২৪ আগস্ট নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস পালন করা হয়। কিন্তু আজও কি ধর্ষনের ঘটনা কমেছে ? এর কারণ হলো মামলার দীর্ঘসুত্রতা। দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলার কারণে অপরাধীরা পার পেয়ে যায়। তাই নারী-শিশু নির্যাতন ও ধর্ষন মামলাগুলো বিশেষ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন।
তিনি আরো বলেন, ৯৫’র ইয়াসমিন ধর্ষন ও হত্যার প্রতিবাদে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ফলে আমরা যে বিচার পেয়েছি তা বিশে^র ইতিহাসে বিরল। সেদিন যদি দিনাজপুরের মানুষ জেগে না উঠত তাহলে হয়তো অপরাধি পুলিশের বদলে আমার ফাঁসি হতো।
শহীদ সামু-কাদের-সিরাজ স্মরণ কমিটির আহ্বায়ক মো. মজিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় প্রধান আলোচক বক্তব্য রাখেন বীরগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ড. এ.কে. এম মাসুদুল হক। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দিনাজপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি স্বরুপ বকসী বাচ্চু, সুন্দরপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মো. হামিদুল ইসলাম, কাহারোল উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. বজলুর করিম বাবুল প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ১৯৯৫ সালের ২৪ আগস্ট কিছু বিপথগামী পুলিশ সদস্য ইয়াসমিনকে ধর্ষনের পর শ^াসরোধ করে হত্যা করে। তারই প্রতিবাদে যে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল তার চূড়ান্ত রুপ নেয় ২৭ আগস্ট। সেদিন বিক্ষুব্ধ জনতার মিছিলে পুলিশের গুলিতে সামু, কাদের, সিরাজসহ ৭জন নিহত হয়। সেই থেকে তাদের স্মরণে ২৭ আগস্ট স্মরণ সভা পালিত হয়ে আসছে।