দাফনের ২ মাস ২০ দিন পর ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুরের মানবাধিকারকর্মী আবু সাঈদের (৩০) লাশ কবর থেকে তোলা হয়েছে। তাকে হত্যা করা হয়েছে, স্বজনদের এমন অভিযোগের পর আদালতের নির্দেশে বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২ টার দিকে স্থানীয় কবরস্থান থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়। এ সময় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মিজানুর রহমান ও পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) রুবেল মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
লাশ উত্তোলনের সময় মানববাধিকারকর্মীর বাবা, মা ও পরিবারের অন্য সদস্যরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তারা ঘটনার নঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
নিহত আবু সাঈদ শেরপুর সদর উপজেলার গাজীরখামার ইউনিয়নের শালচূড়া গ্রামের নূর হোসেনের ছেলে। তিনি মানবাধিকার সংগঠন ‘আমাদের আইন’ এর গাজীমখামার ইউনিয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
নিহতের বোন তানজিনা আক্তার বলেন, তার ভাই আবু সাঈদের সঙ্গে গাজীরখামার ইউনিয়নের এক মেয়ের (২৫) সম্পর্ক ছিল। কিন্তু ওই মেডিকেলছাত্রীর পরিবার তাদের সম্পর্ককে মেনে নেয়নি। এর জেরে গত ১১ জুন সন্ধ্যায় তার ভাই আবু সাঈদকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন। ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য আসামিরা এটিকে সড়ক দূর্ঘটনা বলে তাদের পরিবারকে জানান। ঘটনার দিন তারা জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি না করে তাকে অনেক বিলম্ব করে ময়মনসিংহ মেডিকেলে নিয়ে যায়। সেখানে সাঈদকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। এরপর সাঈদের বন্ধুরা তার লাশ বিনা ময়না তদন্তে দাফনের জন্য তাড়াহুড়ো করে। তখন এবিষয়গুলো সাঈদের পরিবারের সন্দেহ হয়। পরে এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে গত ২৭ জুন হত্যার অভিযোগে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ওই মেডিকেলছাত্রীসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করে একটি অভিযোগ করেন। পরে আদালতের নির্দেশে গত ২২ আগস্ট সদর থানায় মামলা হিসেবে লিপিবদ্ধ করা হয়। আবু সাঈদের পরিবার লাশের ময়নাতদন্ত করার দাবি জানালে আদালত তা মঞ্জুর করে। এরই পরিপেক্ষিতে বুধবার কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে পুলিশ।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মিজানুর রহমান বলেন, আদালতের নির্দেশে কবর থেকে আবু সাঈদের লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। লাশের সুরতাহাল রিপোর্ট তৈরী করা হয়েছে। এরপর লাশের ময়নাতদন্ত ও ফরেনসিক রিপোর্ট আসলে আদালত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিবেন।