উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণে ব্রহ্মপুত্রসহ জেলার সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানা গেছে, গাইবান্ধার ফুলছড়ি পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ১৩ সে.মি. বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার এবং ঘাঘট নদীর পানি ১০ সে.মি বেড়ে বিপদ সীমার ৬ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে করে জেলার চার উপজেলার ২৯টি ইউনিয়নের ১২০টি গ্রাম ও চরের অন্ততপক্ষে ২৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে হয়ে পড়েছে।
পানি বৃদ্ধির ফলে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী উড়িয়া, গজারিয়া, ফুলছড়ি, এরেন্ডাবাড়ী ও ফজলুপুর ইউনিয়নে ১৫ হাজার পরিবার পানি বন্দী হয়েছে। এই উপজেলার বীজতলা, রোপা আমন, পাট, মরিচ, বেগুন, পটলসহ নি¤œাঞ্চলের বিভিন্ন ফসল তলিয়ে গেছে। এদিকে ফুলছড়ি উপজেলার উড়িয়া ইউনিয়নের গুনভরি হতে রতনপুর এবং মশামারী হতে ভুষিরভিটা যাওয়ার রাস্তাসহ বেশ কয়েকটি রাস্তা তলিয়ে যাওয়ায় ওই এলাকার লোকজনের দুর্ভোগ বেড়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ফুলছড়ির রতনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠটি হাঁটু পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া, ঘুড়িদহ ও সাঘাটা ইউনিয়নের ৫ হাজার পরিবারের বসতবাড়িতে পানি উঠেছে।
এদিকে, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর, বেলকা কাপাসিয়া, চন্ডিপুর, তারাপুর ও শ্রীপুর ইউনিয়নের ৩০টি গ্রামের ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়েছে। এই উপজেলার চন্ডিপুর, কছিমবাজারে তীব্র নদীভ্াঙ্গন দেখা দিয়েছে।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানি, মোল্লারচর, গিদারী ইউনিয়নের ৪ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়েছে। এই উপজেলার মানুষজন গো-খাদ্য সংকটে পড়েছে। এ ব্যাপারে কামারজানি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুস সালাম জাকির জানান, পানি বৃদ্ধির কারণে নদীর শ্রোত বেড়ে যাওয়ায় কামারজানি ইউনিয়নের ৫টি ওয়ার্ডে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় ৮০টি পরিবার তাদের বসতভিটা হারিয়েছেন। গাইবান্ধা জেলার চরাঞ্চলে কাশবন তলিয়ে যাওযায় গবাদি পশুর খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে আমনসহ বিভিন্ন ধরনের সবজিও বেশ কয়েকদিন ধরে বনার পানিতে ডুবে থাকায় পচন ধরেছে। জেলায় বন্যার স্থায়ীত্ব বাড়ায় জনগণের দুর্ভোগও সৃষ্টি হচ্ছে।