রাজশাহীর মোহনপুরে যৌতুক না পেয়ে গৃহবধূকে মারধর করে গুরুতর জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় বুধবার রাতে নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূর বাবা শামসুল আলম বাদি হয়ে মেয়ের স্বামী উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা আবদুল মতিনের বিরুদ্ধে মোহনপুর থানায় নারী শিশু আইনে মামলা করেছেন।
ওই গৃহবধূর নাম শারমিন সুলতানা (২২)। তাঁর বাবার বাড়ি উপজেলার বৃ-হাটরা গ্রামে। গৃহবধূ শারমিন সুলতানার ভাষ্য, ২০১৮ সালে নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার চকমানিক গ্রামের আবদুল কাশেমের ছেলে ও উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা আবদুল মতিন (২৮) সাথে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের সময় তাঁর স্বামীকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার দেওয়া হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে যৌতুকের জন্য তাঁকে ফের চাপ দিতে থাকেন স্বামী ও তাঁর পরিবারের লোকজন। যৌতুক দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাঁর স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি প্রায়ই তাঁকে মারধর করতেন। অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে তাঁকে শারীরিক নির্যাতনও করা হতো। সংসার করার কথা ভেবে এতদিন তিনি সব মুখ বুজে সহ্য করতেন। এখন তাঁর সহ্য সীমা ছাড়িয়ে গেছে।
মামলার এজাহার ও পরিবার সূত্র জানায়, শারমিন সুলতানার স্বামী আবদুল মতিন কৃষি অফিসে উপ-সহকারি কর্মকর্তা হিসেবে চাকুরি করেন। বুধবার আবদুল মতিন বৃ-হাটরা গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে আসেন। রাত সাড়ে ৭ টার সময় আবারও শারমিন সুলতানার কাছে ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। যৌতুকের টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে বুধবার রাত সাড়ে ৭ টার সময় শ্বশুর বাড়িতে তাঁকে লাঠি দিয়ে বেদম মারধর করে স্বামী আবদুল মতিন। ওই স্থানীয়রা আবদুল মতিনকে আটক করে রাখেন। মোহনপুর থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ গিয়ে আহত অবস্থায় গৃহবধূকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। স্বামী আবদুল মতিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গৃহবধ শারমিন সুলতানার বাবা শামসুল আলম বলেন, ‘যৌতুকের টাকার জন্য মেয়েটাকে প্রতিনিয়ত মারধর করা হয়। বিয়ের সময় নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার দিয়েছি। এখন আরও ৫ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য আমার বাড়িতে এসে মেয়েকে মারধর করেছেন আবদুল মতিন।
এ বিষয়ে শারমিন সুলতানা বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে আমাকে মারধর করত স্বামীসহ তার পরিবারের লোকজন।
শ্বশুর-শাশুড়ির কথা মতো স্বামী যৌতুকের জন্য চাপ সৃষ্টি করত। সংসার কথা চিন্তা করে অনেক নির্যাতন সহ্য করেছি। আমি এখন এর উপযুক্ত বিচার চাই।’
অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য আবদুল মতিনের পরিবারের লোকজনের সাথে যোগাযোগ করে কথা বলা সম্ভব হয়নি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সহকারী পরিদর্শক (এসআই) আমানউল্লাহ বলেন, মামলার পর রাতেই স্বামী আবদুল মতিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, মামলার পর রাতেই স্বামী আবদুল মতিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামিকে বৃহস্পতিবার আদালতের মাধ্যমে জেল-হাজতে পাঠানো হয়েছে।