লক্ষ্মীপুর শহরের একটি বেসরকারী হাসপাতাল থেকে এক নবজাতকে চুরি করে নেয়ার সময় এক নারীকে হাতে নাতে আটক করে পুলিশে সোর্পদ করেছে স্থানীয়রা। লক্ষ্মীপুর শহরের একটি বেসরকারী হাসপাতাল থেকে এক নবজাতকে চুরি করে নেয়ার সময় এক নারীকে হাতে নাতে আটক করে পুলিশে সোর্পদ করেছে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় হাসপাতাল এলাকায় চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
রোববার দুপুরে শহরের নোভা ট্রমা সেন্টার হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। ভিকটিম শিশু সদর উপজেলার পশ্চিম লক্ষ্মীপুর গ্রামের সুমনের নবজাতক সন্তান। আটককৃত নারী শিশু চুরি করার দৃশ্যটি হাসপাতালের সিসি টিভি ক্যামরায়ও ধরা পড়ে বলে জানা যায়। আটককৃত মিতু আক্তার সদর উপজেলার বশিকপুর এলকার প্রবাসী শাহজাদার স্ত্রী বলে জানা যায়।
শিশুর স্বজন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ জানায়, পশ্চিম লক্ষ্মীপুর গ্রামের সুমনের স্ত্রী সাবিনার প্রসব বেদনা উঠলে তাকে লক্ষ্মীপুর শহরের নোভা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে সিজারের মাধ্যমে ছেলে সন্তান জম্ম হয়। হাসপাতালের ২য় তলার ২১৫ নম্বর বেডে প্রসব পরবর্তী চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেলেন তারা। রোববার বেলা ১১ টায় হঠাৎ নার্স বেশে এক নারী তাদের কক্ষে প্রবেশ করে। এ সময় শিশুটিকে চিকিৎসককে দেখানোর কথা বলে নার্সের এপ্রোন খুলে কোলে নিয়ে বের হয়ে যায় ওই নারী। পরে শিশুটির নানী পিছু নেন তার। একপর্যায়ে শিশুটিকে নিয়ে ওই নারী রিক্শাযোগে পালিয়ে যাওয়ার সময় নানী চোর চোর বলে চিৎকার করে উঠেন। পরে হাসপাতাল সংলগ্ন জেলা পরিষদের সামনে থেকে তাকে আটক করে স্থানীয়রা।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাতে সদর উপজেলার দালাল বাজার এলাকার সাবিনা আক্তার নোভা ট্রমা সেন্টারে সিজার অপারেশনের মাধ্যমে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়। রোববার দুপুরে নার্স পরিচয়ে মিতু আক্তার হাসপাতালে যায়। পরে ওই নবজাতককে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে কৌশলে চুরি করে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তা থেকে তাকে-হাতে নাতে আটক করে স্থানীয়রা। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে নারীকে আটক করে। এ সময় ওই নারীকে আটক করে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। খবর পেয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জসীম উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ পুলিশ সদস্যরা হাসপাতালে ছুটে আসে। এ সময় সিসি টিভির ফুটেজ দেখে চুরির দৃশ্য ধরা পড়ে। এ ঘটনায় হাসপাতালে উৎসুক জনতার ভিড় জমে। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে হাসপাতাল এলাকায়।
তবে নবজাতকের বাবা সুমন হোসেন ও মা সাবিনা আক্তার জানান, দুপুরে নার্স পরিচয়ে নবজাতককে হাসপাতালের নিচ তলায় ডাক্তার দেখানোর কথা বলে নিয়ে যায়। পরে ডাক্তারকে না দেখিয়ে রিক্্রা করে নবজাতককে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় উপস্থিত লোকজন টের পেয়ে ওই নারীকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চেয়েছেন তারা।
শিশু উদ্ধারকারী শিপন জানান, বাচ্চা নিয়ে যাচ্ছে মহিলার এমন চিৎকার শুনে দৌড়ে গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধারও নারীকে আটক করে হাসপাতালে নিয়ে আসি।
হাসপাতালের কতর্ব্যর চিকিৎসক জয়নাল আবেদিন জানান, নবজাতকে চুরি করার সময় নারীকে হাতে-নাতে আটক করা হয়েছে। পরিকল্পিতভাবে এ নবজাতককে চুরির চেষ্টায় চালায়। এ নারীর সাথে আরো কেউ জড়িত থাকতে পারে। তারা নবজাতক চুরির একটি সিন্ডিকেট বলে ধারনা করছি। তার কাছ থেকে নার্সের এ্যাপ্রন জব্দ করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার ড. এ,এইচএম কামরুজ্জামান বলেন, চুরি করার সময় নবজাতককে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় নারীকে আটক করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি ও এ ঘটনার সাথে আরো কেউ জড়িত রয়েছে কিনা,সে বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।