রাজশাহীর তানোরে দূনীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্মকর্তা পরিচয়ে মোবাইলে চাঁদাবাজির ঘটনায় এক ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তার ৩০ হাজার টাকা খোয়া গেছে। সম্প্রতি গত (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টার দিকে ঘটনাটি ঘটে। এঘটনায় উপজেলা সদর ভূমি অফিস ছাড়াও ৩টি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীর মাঝে চরম চাপাক্ষোভ আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সংশ্লিষ্ট জানা গেছে, সম্প্রতি গত ৭ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টার দিকে তানোর উপজেলার কামাগাঁ ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আব্দুস সাত্তারের মোবাইলে ফোন আসে। এঅবস্থায় ফোনটি রিসিভ করা হলে অপরপ্রান্ত থেকে দুদক কর্মকর্তার পরিচয় দেয়া হয়। পরে ঘুষ গ্রহণের অপরাধে দুদকে সাত্তারের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে তাকে জানানো হয়। এছাড়াও বিষয়টি রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. হুমায়ুন কবীর স্যার অবগত আছেন এমনটিও বলা হয়। এতে ভূমি কর্মকর্তা আব্দুস সাত্তার ভিতস্থ হয়ে দুদকে তার বিরুদ্ধে মামলা যেন না হয় সে ব্যাপাওে তাকে অনুরোধ করেন। এসময় ফোনে কথার চলার এক পর্যায়ে ভূয়া দুদক কর্মকর্তা ৩০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। পরে বিষয়টি সাত্তারের বুঝে উঠতে দেরি হলে ঘুষ গ্রহণের অপরাধে এক্ষুণি দুদকের মামলায় তাকে গ্র্রেফতার করা হবে বলেও চরম ভয়ভীতি দেখান ওই দুদক কর্মকর্তা পরিচয়কারী প্রতারক। এতে ভূমি কর্মকতা সাত্তার ভীতস্থ হয়ে ওই দুদক কর্মকর্তার ০১৩১৭-০০৬৯৬৬ নম্বরে ৩০ হাজার টাকা বিকাশে দেন।
শুধু আব্দুস সাত্তারকে নয় একই কায়দায় মুন্ডুমালা ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম ও তানোর উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার পুলক কুমারের নিকট টাকা চেয়ে ফোন দেয়া হয়। তবে, তারাও ভীতস্থ হয়ে এতো টাকা তৎক্ষণাত ম্যানেজ করতে দেরি করেন। এঅবস্থায় প্রতারকের ফোন আসতেই থাকে। এতে তাদের সন্দেহ হলে নিকট আতœীয় ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবহিত করেন। পরে এসিল্যান্ডের দায়িত্বরত উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ওই নম্বরের সূত্র ধরে থানায় জিডি করার পরামর্শ দেন।
এনিয়ে প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগী উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আব্দুস সাত্তার বলেন, ঘটনাটি নিয়ে পরের দিন উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো হলে থানায় জিডি করতে বলেছেন। কিন্তু ব্যস্ততার কারণে তা সম্ভব হয়নি। আগামী সোমবারে ইউএনও স্যারের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এব্যাপারে তানোর এসিল্যান্ডের দায়িত্বরত উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পঙ্কজ চন্দ্র দেবনাথ বলেছেন, ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা ওই প্রতারকে বিকাশে টাকা দেবার পরে আমাকে জানান। পরে ওই নম্বরের সূত্র ধরে থানায় জিডি করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে জানান ইউএনও।
এবিষয়ে রাজশাহী দুদকের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এভাবে দুদকের ভূয়া পরিচয় দিয়ে দালাল/ ভূয়া অফিসার/ একটি চক্র রাজশাহীর বিভিন্ন জায়গায় সক্রিয় থেকে দুদকের সুনাম নষ্ট করছেন। অনুরূপ কোন অভিযোগ থাকলে দুদকের হটলাইনে জানানোর জন্য অনুরোধ জানান তিনি।