জাতীয় পরিচয়পত্রে মৃত থাকায় বয়স্কভাতার আবেদন করতে পারছেন না গোলজান বিবি। বয়স্কাভাতার কার্ড করতে গিয়ে জানতে পারেন তিনি মৃত। ঘটনাটি ঘটেছে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলায়।
ভূক্তভোগি নারীর নাম মোছা. গোলজান বিবি (৯২)। তাঁর বাড়ি বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের মধুপুর গ্রামে। গোলজানের স্বামীর নাম গেদু মন্ডল। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ি তাঁর জন্ম তারিখ ১৯২৯ সালের ৫ এপ্রিল। তিনি দুই ছেলে ও তিন মেয়ে সন্তানেন জননী।
ভুক্তভোগি গোলজান বিবির মেয়ে বিউটি খাতুন বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের পরের বছর আমার বাবা মারা যায়। আমার মায়ের অনেক বয়স হয়েছে। শরীরের অবস্থা খুব একটা ভালো না। আমার মা কানে শুনতে পায় না। ভাইদের অবস্থাও ভালো না। কৃষিকাজ করে কোনো মতো সংসার চলে। কয়েক মাস আগে তিনি ভাতার কার্ড করতে ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে ছিলেন। কিন্তু তিনি নিবন্ধন করতে পারেন নাই। পরে জানতে পেরেছি সরকারি তালিকায় তিনি মারা গেছেন। কিন্তু আমার মা তো জীবিত আছে। এটা কেমন কথা।
স্থানীয় গ্রাম পুলিশ রেজাউল ইসলাম বলেন, কয়েক মাস আগে বয়স্ক ভাতা, বিধাব ভাতা, স্বামী পরিত্যক্তা মহিলাদের সরকারি সহায়তা নিয়ে মাইকিং করা হয়। এরপর তিনি কার্ড করার জন্য নারুয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে গিয়ে ছিলেন।
নারুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবদুস সালাম বলেন, নারুয়াতে আগেও দুইজনের বয়স নিয়ে জটিলতা ছিল। বাবার চেয়ে ছেলের বয়স বেশি। আবার মায়ের চেয়ে ছেলের বয়স বেশি। কিন্তু জীবিত থেকেও মৃত পাওয়া গেছে একজন। বয়স নিয়েও ঝামেলাও আছে। এখন জন্মনিবন্ধন সংশোধন করাও বেশ জটিল হয়ে গেছে।
বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন বলেন, জীবিত থেকেও এত মৃতের ঘটনা কেন আসছে তা বুঝতে পারছি না। ইতিমধ্যে এধরণের ১৩ জনের সমস্যা সমাধান করা হয়েছে। কয়েকদিন আগে আরও ছয়জনের সংশোধনের জন্য পাঠিয়েছি। ওই নারীও আবেদন করলে তা সংশোধন করে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, এনআইডিতে মায়ের চেয়ে ছেলের বয়স বেশি বা বাবার চেয়ে ছেলের বয়স বেশি হওয়ার ঘটনাও সত্য। তবে এজন্য ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রথমে জন্মনিবন্ধন সংশোধন করে আনতে হবে। ভুক্তভোগিরা তা সংশোধন করে নিয়ে না আসায় তা সমাধান করা সম্ভব হয়নি।