তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (তিতাস) আবাসিক গ্রাহকদের দ্রুত প্রিপেইড মিটার সুবিধা দিতে দুটি প্রকল্প নিয়েছে। ইনস্টলেশন অব ৫ দশমিক ৪৯ লাখ প্রিপেইড মিটার ফর টিজিটিডিসিএল প্রকল্পের আওতায় সাড়ে ৫ লাখ এবং ইনস্টলেশন অব ৭ লাখ প্রিপেইড মিটার ফর টিজিটিডিসিএল প্রকল্পের আওতায় ৭ লাখ গ্রাহককে প্রিপেইট মিটারের আওতায় আনা হবে। মোট সাড়ে ১২ লাখ গ্রাহকের আঙিনায় ওই মিটার বসানো হবে। প্রকল্প দুটির পিডিপিপি অনুমোদনের জন্য জ্বালানি বিভাগ পরিকল্পনা কমিশনে চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (তিতাস) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, তিতাস গ্যাসের অপচয় রোধ, গ্রাহক সাশ্রয়ী এবং সিস্টেম লস কমাতে প্রিপেইড মিটার স্থাপন করছে। তবে তা গ্রাহক বিবেচনায় খুব ধীরগতিতে চলছে। প্রিপেইড মিটার স্থাপনে গতি আনতেই এখন সাড়ে ১২ লাখ মিটার স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। বৃহৎ ওই প্রকল্পে জাপান ও এডিবি সহায়তা করবে। সাড়ে ১২ লাখ প্রিপেইড মিটার প্রকল্পে জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন (জেবিআইসি) ৭ লাখ এবং এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড (এডিবি) সাড়ে ৫ লাখ মিটার স্থাপনে অর্থায়ন করছে। পরিকল্পনাটি বাস্তবায়িত হলে তিতাসের আবাসিক গ্রাহকের অর্ধেকেরও বেশি প্রিপেইড মিটার সুবিধার আওতায় আসবে। আগামী ৩ বছরের মধ্যে তিতাসের প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে।
সূত্র জানায়, তিতাস ইতিমধ্যে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন (জাইকা) সহায়তায় ২ লাখ প্রিপেইড মিটার স্থাপনে স্থাপনের কাজ শেষ করেছে। ওই প্রকল্পের আওতায় রাজধানীর মেট্রোপলিটন এলাকায় তিতাসের গ্রাহকরা প্রিপেইড মিটার পেয়েছে। বর্তমানে জাইকার সহায়তায় আরো ১ লাখ ২০ হাজার প্রিপেইড মিটার স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। ইতিমধ্যে জাপান থেকে ১৯টি লটে মোট ১ লাখ ২০ হাজার প্রিপেইড মিটার দেশে এসেছে। তার মধ্যে সংস্থাটি চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৮৬ হাজার মিটার স্থাপনের কাজ শেষ করেছে। বাকি মিটার স্থাপনের কাজ তিতাস চলতি বছরের মধ্যেই শেষ করতে চায়।
সূত্র আরো জানায়, বর্তমানে তিতাসের আবাসিক গ্রাহক সংখ্যা ২৮ লাখ ৫৫ হাজার। তার মধ্যে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর নাগাদ ৩ লাখ ৩৩ হাজার ১০০ গ্রাহক প্রিপেইড মিটার সেবার আওতায় এসেছে। যা মোট গ্রাহকের মাত্র ১০ শতাংশ। এখনো প্রিপেইড মিটার সেবার বাইরে বাকি ৯০ শতাংশ গ্রাহক। তিতাসের আওতাধীন যেসব আবাসিক গ্রাহক রয়েছে রাজধানীতে তার ৮০ শতাংশ। প্রিপেইড সুবিধা পাওয়া মিটার গ্রাহকরা বলছেন, আগের চেয়ে গ্যাস বিলিং সিস্টেমের চেয়ে বর্তমানে প্রিপেইড মিটার স্থাপনে তাদের ৪০-৫০ শতাংশ খরচ কমে এসেছে।
এদিকে এ বিষয়ে তিতাসের মহাব্যবস্থাপক ও প্রিপেইড মিটার স্থাপন প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী ফয়জার রহমান জানান, তিতাসের আওতাধীন আবাসিক গ্রাহকদের মধ্যে ইতিমধ্যে ৩ লাখেরও বেশি গ্রাহক প্রিপেইড পাচ্ছেন। বড় প্রকল্পের মাধ্যমে বাকি গ্রাহকদের প্রিপেইড সেবার আওতায় আনার কাজ চলমান রয়েছে। তার বাইরে খোলা বাজার থেকে প্রিপেইড মিটার ক্রয় করার সরকারি সিদ্ধান্তও রয়েছে।
অন্যদিকে তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আলী ইকবার মো. নুরুল্লাহ জানান, দ্রুত প্রিপেইড মিটার স্থাপনে অনেকগুলো প্রকল্প নেয়া হয়েছে। তবে বড় আকারে প্রিপেইড মিটার স্থাপনে বিদেশী সংস্থাগুলোর অর্থায়ন প্রত্যাশা করা হচ্ছে। যদি সেগুলো পাওয়া যায় তাহলে প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে তিতাসের ৫০ শতাংশের বেশি গ্রাহক প্রিপেইড মিটারের সুবিধা নিতে পারবে।