সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজা। আর কয়েকদিন বাদেই দেবী দূর্গা আসছেন। দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে বিরাজ করছে সাজ সাজ রব। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালনের জন্যই দেবী দুর্গার স্বর্গ থেকে আগমন ঘটেছিল মর্ত্যলোকে। এরই ধারাহিকতায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা প্রতি বছর শারদীয় উৎসব হিসেবে দূর্গাপূজা উদ্যাপন করে আসছেন। আগামী ১১ অক্টোবর সোমবার বেলতলায় ষষ্ঠী পূজার মধ্যদিয়ে শুরু হবে মূল দেবী বন্ধনা। এ অনুষ্ঠান চলবে পাঁচ দিনব্যাপী। ১৫ অক্টোবর মহাদশমীর মধ্যদিয়ে শেষ হবে প্রতিমা বিসর্জন।
এ উপলক্ষে গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় প্রতিটি মন্দিরে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন প্রতিমা শিল্পীরা। শারদীয় দুর্গোৎসবকে পরিপূর্ণ রূপ দিতে মন্দিরগুলোর প্রস্ততি চলছে। দেবীকে স্বাগত জানাতে সর্বত্র আনন্দঘন পরিবেশ বিরাজ করছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা, নারী-পুরুষসহ সব বয়সী মানুষ এ সর্ববৃহৎ শারদীয় পূজাকে সার্থক করতে প্রহর গুণছে। সবমিলিয়ে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে প্রতিটি পূজামন্ডপে।
বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ পলাশবাড়ী উপজেলা শাখার সভাপতি নির্মল কুমার মিত্র জানান, উপজেলায় এবছর ৬৬টি পূজা মন্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। করোনা কালীন সময়ে সার্বিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দূর্গাপুজা সুষ্ঠাভাবে উদ্যাপনের জন্য সকল প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। পূজার সময় উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাসহ সার্বক্ষনিক নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবীও জানান তিনি।
পলাশবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন মন্ডপে ঘুরে দেখা যায়, কোথাও খড় দিয়ে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ করেছেন আবার কোথাও শিল্পীর সুনিপুণ হাতের ছোঁয়ায় কৃত্রিম জীবন পাচ্ছেন মা দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ, অসুর ও শিবমূর্তি। দিনভর পরিশ্রমে প্রতিমা শিল্পীদের দম ফেলার সময় নেই। ইতোমধ্যেই প্রতিমার মাটির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এরপর শুরু হবে রঙ তুলির আঁচড় ও সাজসজ্জার বাকি কাজ।
পলাশবাড়ী পৌরশহরের গিরিধারীপুর মিলটন রোডে গিয়ে দেখা যায় প্রতিমা কারিগর শ্রী খোকন চন্দ্র মালাকার, সুজিত, বিদ্যুৎ ও সনজিদসহ অন্যান্য কারিগর অত্যন্ত নিখুঁত ভাবে প্রতিমা তৈরীতে ব্যস্ত। তিনি জানান এ বছর ৩০টি মন্ডপের জন্য প্রতিমা তৈরীর কাজ করছেন। কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন ধরনের প্রতিমা তৈরি করেছন তিনি। গত বছর থেকে এ বছর একটু কাজের চাপ বেশি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এ বাজারে পরিশ্রমের পর প্রতিমা তৈরি করে যে মজুরি পান তা দিয়ে জীবন যাপন করা কষ্টকর। অনেকেই এ পেশা ছেড়ে চলে গেলেও বাপ-দাদার আদি পেশা টিকিয়ে রাখছেন বলে তারা জানান।