লক্ষ্মীপুরে একটি মাদ্রাসার দাখিল পরীক্ষার্থী ছয় ছাত্রের চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসার শিক্ষকের বিরুদ্ধে। গত বুধবার (৬ অক্টোবর) লক্ষ্মীপুরের রায়পুর বামনী ইউনিয়নের হামছাদী কাজির দিঘীরপাড়া আলিম মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে। এতে ছাত্র ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয় ঘটনাটি। এরপর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন ওই শিক্ষক।
চুল কেটে দেওয়া ওই শিক্ষকের নাম মো. মঞ্জুরুল কবির। তিনি ওই মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক ও ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামের আমির। স্থানীয়রা জানান, ঘটনার দিন মাদ্রাসায় ইংরেজি ক্লাস শেষে ছয়জন শিক্ষার্থীর চুল কেটে ওই শিক্ষক।
মাদ্রাসার দাখিল শিক্ষার্থী নাজমুল আলম ও ফজলে রাব্বী জানান, বুধবার তাদের ইংরেজি ক্লাস চলছিল। ও সময় হঠাৎ সিনিয়র শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির ক্লাসে ঢুকে কাঁচি দিয়ে ছয়জন ছাত্রের মাথার চুল কেটে দেন। ওই ঘটনার পর ছাত্ররা ক্লাস না করে বেরিয়ে যায়। পরে অন্য শিক্ষকদের মধ্যস্থতায় ছাত্ররা তাদের ক্লাসে ফেরে। এরপর শুক্রবার সেই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগে ভাইরাল হলে ছাত্র ও অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ছাত্র বলেন, মঞ্জুরুল স্যার আমাদের ‘ক’ শাখার ছয়জনের চুল কেটে দিয়েছেন। কিন্তু ‘খ’ শাখার কারো চুল কাটেননি। আমি মাথা ন্যাড়া করার কারণে চারদিন মাদরাসায় যাইনি। পরে স্যার দাখিল পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দিয়েছেন।
এদিকে চুল কেটে দেওয়ার কথা স্বীকার করে শিক্ষক মঞ্জুরুল বলেন, আমি দাখিলের সব ছাত্রকে পরীক্ষার আগের দিন চুল কেটে মাদ্রাসায় আসতে বলেছি। তারা আমার কথা না শোনায় কয়েকজনের চুল কেটে দিয়েছি। যা করা হয়েছে ছাত্রদের ভালোর জন্য করা হয়েছে। তবে কাউকে হুমকি ধমকি, এমনকি বেত্রাঘাত করিনি।
স্থানীয় বামনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তাফাজ্জল হোসেন মুন্সি বলেন, ওই শিক্ষক প্রায়ই ছাত্রদের ওপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেন। তার ভয়ে ছাত্র তো দূরের কথা অন্য শিক্ষকরাও নিরুপায়।
রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরীন চৌধুরী বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। সত্যতা পাওয়া গেলে বিধি মোতাবেক ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রায়পুর থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ মো. আবদুল জলিল জানান, বিষয়টি শুনেছি। তবে এখনও কেউ অভিযোগ করেন নাই। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।