বকশীগঞ্জে ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত এক নারী সদস্যকে ধর্ষনের অভিযোগে আবদুর রহিম নামে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। মামলার বাদী বিবাদী দুজনেই বকশীগঞ্জ উপজেলার বাট্টাজোড় ইউপির সদস্য। গত ৩ অক্টোবর জামালপুর বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ আদালতে মামলাটি করেন ওই নারী সদস্য। ২৮ সেপ্টেম্বর বাট্টাজোড় ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে। শুক্রবার সাংবাদিকদের ওই নারী সদস্য জানান মামলার পর থেকেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তিনি।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,বকশীগঞ্জ উপজেলার বাট্টাজোড় ইউনিয়নের সংরক্ষিত (৭,৮,৯) ওয়ার্ডের নারী সদস্য এক সন্তানের জননী (৩৫) ও ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবদুর রহিম একই এলাকার বাসিন্দা। একই পরিষদের সদস্য হওয়ায় ওই নারী সদস্যকে বিভিন্ন সময়ে নানা ধরনের লোভ লালসা ও বিবাহের প্রলোভন দেখাইতো ইউপি সদস্য আবদুর রহিম সরকার। এছাড়াও নানা ভাবে তাকে উত্ত্যক্ত ও কুপ্রস্তাব দিত সে। কিন্তু ওই নারী সদস্য তার প্রস্তাবে রাজি হয়নি।
বাট্টাজোড় ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে সুসম্পর্ক থাকায় পরিষদের অফিস কক্ষের চাবি ইউপি মেম্বার আবদুর রহিমের কাছেই থাকে। এমনকি চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে পরিষদের কার্যক্রমও চালায় রহিম সরকার। গত ২৭ সেপ্টেম্বর একটি জন্ম নিবন্ধন সনদের জন্য ইউপি মেম্বার রহিমের সাথে কথা বলেন ওই নারী সদস্য। তাকে পরের দিন সকাল বেলা অফিসে আসতে বলেন ইউপি সদস্য আবদুর রহিম। ২৮ সেপ্টেম্বর সকাল ১০ টায় ওই নারী সদস্য পরিষদে গিয়ে চেয়ারম্যানের কক্ষে বসে থাকা ইউপি সদস্য আবদুর রহিমের সাথে জন্ম সনদের বিষয়ে কথা বলেন। একপর্যায়ে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে নারী সদস্য বাথরুমে প্রবেশ করতে যান। এমন সময় দরজা ধাক্কা দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করেন আবদু রহিম। বাথরুমেই ওই নারী সদস্যকে জোড়পূর্বক ধর্ষন করেন ইউপি সদস্য আবদুর রহিম। পরে দ্রুত মোটর সাইকেল নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে চলে যান। তাৎক্ষনিক ঘটনাটি ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক তালুকদারকে মোবাইল ফোনে অবহিত করেন ওই নারী সদস্য। চেয়ারম্যান বিষয়টি কাউকে না জানানোর অনুরোধ করে সঠিক বিচারের আশ্বাস দেন। ওই ঘটনায় চেয়ারম্যান কোন বিচার না করায় গত ৩ অক্টোবর জামালপুর আদালতে মেম্বারের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন ওই নারী সদস্য।
ওই নারীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোকাম্মেল হক জানান,মামলা দায়েরের পর আদালত তার ডাক্তারী পরীক্ষার রিপোর্ট ও মামলাটি তদন্ত পুর্বক রিপোর্ট প্রদানের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে নারী ইউপি সদস্য জানান,আমি তালাকপ্রাপ্ত অসহায় একজন নারী। এই সুযোগে আবদুর রহিম নানা সময়ে আমাকে বিভিন্ন প্রলোভন ও উত্ত্যক্ত করতো। ঘটনানার দিন সূযোগ বুঝে সে আমার সর্বনাশ করেছে। তাই আমি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। আশা করি আদালতের মাধ্যমে ন্যায় বিচার পাব। মামলার পর নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য আবদুর রহিম বলেন,এ রকম কোন ঘটনাই পরিষদে ঘটেনি। একটি কুচক্রি মহল আমার বিরুদ্ধে ওই নারী সদস্যকে দিয়ে মিথ্যা মামলা করিয়েছে। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা ভিত্তিহীন।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক তালুকাদারের মুঠোফোনে কয়েক বার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তাই তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।