আব্দুল মালেক নামে এক কৃষক খুন হওয়ার মাত্র ১১দিনের মধ্যে হত্যা মামলার যাবতীয় ক্লু সহ জড়িত মুল আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানার দিক নিদর্শনায় হত্যা মামলার ক্লু উদ্ঘাটন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবু বক্কর সিদ্দিক। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরাসরি জড়িত প্রধান আসামি নিহতের আপন ভাতিজা সোহেল রানাকে (১৯) কে ১১ দিন পর গ্রেফতার করেছেন পুলিশ।
শনিবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন দুপুরের গ্রেফতারকৃত সোহপল রানাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার রাতে নিজ বাসা থেকে সোহেল রানাকে গ্রেফতার করা হয়।
নিহত কৃষক আব্দুল মালেক উপজেলার দোয়ানী গ্রামের বারেক আলীর ছেলে। তিনি দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক।
হত্যার সাথে জড়িত সোহেল রানা নিহত কৃষক আব্দুল মালেকের ছোট ভাই আব্দুল খালেকের ছেলে। প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ভাতিজার হাতে খুন হয় মালেক।
জমি নিয়ে বিরোধে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিহত আব্দুল মালেকের বাবা বারেক আলীর, প্রতিবেশী বাবুল হোসেন, সাজু, বাবু, সফিকুল ইসলাম সফি, মিন্টু ও মইনুলসহ ৬ জনের নামে হাতীবান্ধা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের ২নং দোয়ানী গ্রামে গত (২৬ সেপ্টেম্বর) রাতে নিজ বাড়ীর সামনে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন একই এলাকার আব্দুল বারেকের ছেলে আব্দুল মালেক (৪৫)। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে নিহতের পরিবার অভিযোগ করে আসছিল, পার্শ্ববর্তী একটি পরিবারের সাথে তাদের জমি নিয়ে বিরোধ চলছে এবং তারাই এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু ঘটনার ১১ দিন পর শুক্রবার রাতে মামলার বাদীর নাতি সোহেল রানাকে আটক করে পুলিশ। পরে তাকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে চাচাকে হত্যার কথা স্বীকার করে।
এর আগে লালমনিরহাট জেলা পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানীয় গ্রামে ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেন। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও হাতীবান্ধা থানার উপ-পরিদর্শক আবু বক্কর সিদ্দিককে ঘটনার মুল আসামীদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও হাতীবান্ধা থানার উপ পরিদর্শক আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, সোহেলের শারীরিক একটি সমস্যা নিয়ে তার জ্যাঠা আব্দুল মালেক প্রায় সময় মনোমালিন্য হত এ নিয়ে পারিবারিক ভাবে কলহের সৃষ্টি হত। সেই ক্ষোভ থেকে তার চাচকে হত্যার পরিকল্পনা করে সোহেল। পরে বাজার থেকে একটি হাতুড়ি ক্রয় করে বাড়ির সামনে বসে থাকা চাচার মাথায় আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু ঘটে। পরে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হাতুরীটি পাশে একটি ডোবায় ফেলে দেয়। শনিবার সকালে ওই ডোবা থেকে হাতুড়ীটি উদ্ধার করা হয়। তিনি আরও জানান, এর সাথে আরো কেউ জড়িত কি না সেটাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানার ওসি (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম জানান, আটকের পর হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন সোহেল রানা। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হাতুড়িও উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার দুপুরে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।