পরপর সংসার ভেঙ্গে ফেলার কারণ সন্দেহে ভ্যান চালক জামাল সাকিদারকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ম্যাজিষ্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া সহদর দুই ভাই জব্বার ও মজিদ। ক্লু-লেস এই হত্যার ঘটনার ২৩ দিন পর বগুড়ার গাবতলী মডেল থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১৭ অক্টোবর হত্যার সাথে জড়িত আসামি জব্বার সাকিদার (৩৫) ও আবদুল মজিদ সাকিদার (৩০)কে দুর্গাহাটা বাজার এলাকা হতে গ্রেফতার করে। ধৃত দুইভাই জব্বার সাকিদার ও মজিদ সাকিদার মহিষাবান ইউনিয়নের ধোরা পুর্বপাড়া গ্রামের মৃত কালু সাকিদারের ছেলে। ঘটনার সুত্র থেকে জানাগেছে, গাবতলী উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নের ধোরা পুর্বপাড়া গ্রামের পিতা মৃত সদের সাকিদারের ছেলে ভ্যানগাড়ী চালক জামাল উদ্দীন সাকিদার (৫২), ২৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার পর ভ্যানগাড়ী নিয়ে স্থানীয় পেরীহাট থেকে বাড়ী ফেরার পথে, ধোরা সোলাকুড়িয়া ভাঙ্গা ব্রীজের কাছে পৌঁছামাত্র আসামি মোঃ আবদুল জব্বারসহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন ভ্যান চালক জামাল সাকিদারকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় ও পেটে উপর্যপরী ছুরিকাঘাত করে দ্রুত পালিয়ে যায়। চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন এসে গুরুতর আহত জামাল উদ্দীন সাকিদারকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (শজিমেক) নিয়ে গিয়ে ভর্তি করায়। পেটে ছুরিকাঘাতের ফলে জামালের নারী-ভুড়ি পেরিয়ে যায়। ঘটনার পরদিন ২৭ সেপ্টেম্বর জামাল উদ্দীন সাকিদারের ছেলে রুবেল সাকিদার বাদী হয়ে গাবতলী মডেল থানায় একটি ৩২৬/৩০৭/৩৪ তৎসহ ৩০২ পেনাল কোড মামলা দায়ের করেন। চিকিৎসাধিন অবস্থায় ঘটনার ১৩ দিন পর ৯ অক্টোবর ২০২১ তারিখ দুপুর ১ টায় আহত জামাল সাকিদারের মৃত্যু হয়। ক্লু-লেস-চাঞ্চল্যকর এই হত্যার রহস্য উদঘাটন ও আসামীদের গ্রেফতার করতে মরিয়া হয়ে ওঠে গাবতলী মডেল থানার পুলিশ। বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বিপিএম’র দিক নির্দেশনায়, গাবতলী মডেল থানার সু-যোগ্য কর্মকর্তা ইনচার্জ মোঃ জিয়া লতিফুল ইসলামের নেতৃত্বে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক বাগবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের আইসি (নিঃ) মোঃ আশরাফুল ইসলামসহ থানার বিভিন্ন অফিসারবৃন্দ বিভিন্ন বিশ্বস্থ গুপ্তচর ও লোক লাগিয়ে বিভিন্ন স্থানে গোপনে ও প্রকাশ্যে অভিযান চায়ায়। অবশেষে ১৭ অক্টোবর বগুড়ার গাবতলী দুর্গাহাটা বাজার এলাকা হতে জামাল হত্যার আসামি জব্বার ও মজিদকে পুলিশ গ্রেফতার করে। পুলিশের কাছে প্রাথমিকভাবে হত্যার দায় স্বীকার করে তারা।১৮ অক্টোবর আসামীদের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ মমিন হাসানের আদালতে নেয়া হলে, আসামি আবদুল জব্বার সাকিদার ও আবদুল মজিদ সাকিদার ফৌঃ কাঃ বি-১৬৪ ধারায় হত্যার দায় স্বীকার করে জাবানবন্দী দিয়েছে। তারা বলেছে তাদের সংসার বার বার ভেঙ্গ যায় টেকেনা। তাদের সন্দেহ নিহত জামাল সাকিদার তাদের দুই ভাইয়ের সংসার ভাঙ্গার পিছনে হাত রয়েছে, সন্দেহ হয়। এ-কারনে জামাল সাকিদারকে হত্যার পরিকল্পনা করে খুন করা হয়। আসামি আবদুল জোব্বার সাকিদার ৩টি বিয়ে করলেও তার সংসার টেকেনা, আসামি আবদুল মজিদেরও সংসার ভেঙ্গে যায় বলে জবানবন্দীতে তারা জানিয়েছেন। এব্যপারে গাবতলী মডেল থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ মোঃ জিয়া লতিফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি উপর্যুক্ত তথ্য নিশ্চিত করেন।