ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়ন ঐতিহ্যবাহী ও ইতিহাস সমৃদ্ধ একটি জনপদ এখানে তুলশীগঙ্গা নদী তীরবর্তী ঐতিহাসিক আছরাঙ্গা দিঘী, শতবর্ষী সন্ন্যাসতলী কালিমন্দির, দেওগ্রাম লাঠি খেলার মেলা, এছাড়াও পাঁচটি আর্দশ গ্রাম রয়েছে। আয়তন ১৩.৫৮বর্গ কিঃমিঃ, গ্রামের সংখ্য ৩৫টি, জনসংখ্যা ২৮৪২৬ জন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে দুইটি হাইস্কুল, দুইটি দাখিল মাদ্রাসা, ১১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ভোটার সংখ্যা ১৭৫০২ জন,পুরুষ ৮৮৪১ জন, নারী ৮৬৬১ জন।
জানাগেছে, আগামী ১১ নভেম্বর উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ওই নির্বাচনে দ্বিতীয় বারের মতো আওমীলীগ দলীয় মনোনীত ও নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান শামীম। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে তিনি আবারও নৌকা প্রতীকে ভোট চান।
মশিউর রহমান শামীম যুগান্তরকে জানান, প্রথম বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে সফলভাবে পাঁচ বছর অতিবাহিত করার পর বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় সে কারনে মেয়াদ পরবর্তী সময় ছিলাম আরও কয়েক মাস। করোনা কালিন সময়ে এলাকার কর্মহীন অসহায় পরিবারের মাঝে সরকারি সহায়তার পাশাপাশি ব্যক্তিগত ভাবেও সহায়তা করেছি। যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় দলমত নির্বিশেষে জনগনের পাশে দাঁড়িয়েছি। প্রতিবন্ধীদের মাঝে হুইল চেয়ার, দুস্থ্য মহিলাদের সেলাই মেশিন বিতরন করেছি। বয়স্ক ও বিধবা ভাতা উপযুক্ত ব্যক্তিদের প্রদান করেছি। রাজস্ব খাতের অর্থ, টিআর, কাবিখা, এলজিএসপি, এডিপি প্রকল্পের অর্থ সঠিক স্থানে জনসার্থে ব্যায় করেছি। ছোট বড় ব্রিজ কালভার্ট নির্মান, জলাবদ্ধতা নিরসনে জলডারী সংস্কার ও সহ বাৎসরিক বাজেট ঘোষনা ও বাস্তবায়ন করেছি। পাঁচটি আদর্শ গ্রাম সহ ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকায় সোলার স্ট্রিট লাইট বসানো হয়েছে। স্যানেট্রাইজেশন ব্যবস্থা শতভাগ বাস্তবায়ন করেছি। এলাকার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি রক্ষায় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গুলোতে সরকারি সহায়তা সমানভাবে বন্টন করেছি। অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন প্রচলন ও বাল্যবিয়ে বন্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহনের পাশাপাশি গ্রাম আদালত চালু রেখে এলাকার আইন শৃঙ্খলা রক্ষা ও জনগণের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছি। অসহায়-গরিব শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছি। এলাকার সার্বিক উন্নয়নে হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপির একান্ত সহযোগিতায় গ্রামীন রাস্তা পাকাকরণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলিতে একাডেমিক ভবন নির্মান, ইউনিয়ন পরিষদের ১,২,৩নং ওয়ার্ডে সুবিদার্থে শাখা অফিস নির্মান, ফাসিতলা রাস্তায় পুলিশ বক্স নির্মান করেছি। প্রধানমন্ত্রীর গৃহ নির্মান কর্মসূচি স্বচ্ছতার ভিত্তিতে অসহায় ছিন্নমূল ও গৃহহীনদের মাঝে পাকা বাড়ি নির্মান করে দিয়েছি। আছরাঙ্গা দিঘিতে ইকোপার্ক ও আছরাঙ্গা বিলে প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক জোন নির্মানে হুইপ মহোদয়কে সর্বাত্তক সহযোগিতা করেছি। সকল নির্বাচনে আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থীদের নির্বাচিত করতে নিরলস ভাবে কাজ করেছি।
জেলা, উপজেলার সকল নেতাকর্মী ও আমার সমর্থকদের সাথে সু-সম্পর্ক বজায় রেখে সকল স্তরের গণমানুষের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। সেই কারনে দলীয় নেতৃবৃন্দের আস্তাভজন হয়ে তাদের সহযোগিতা ও মামুদপুর ইউনিয়নবাসীর দোয়াই আমি আবার দ্বিতীয় বার দলীয় মনোনয়ন নৌকা প্রতীক পেয়েছি। জনসেবার মাধ্যমে এলাকাবাসীর মনজয় করতে পেরেছি বলে আমার বিশ্বাস। তারা আবার আমাকে ভোটদিয়ে নির্বাচিত করবে।
এ সময় তিনি দ্বিতীয়বার আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের হুইপ ও সংসদ সদস্য জয়পুরহাট-২, আবু সাইদ আল-মাহমুদ স্বপন এর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। আমি আবারও চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে ইউনিয়নের অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করবো।
চৌমুহনী বাজার বণিক সমিতির সভাপতি ফকরুজ্জামান চৌধুরী রুমি বলেন, আ'লীগ দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী তিন জনের মধ্যে একজন বিদ্রোহী হয়েছেন বাঁকী দুইজন ইউনিয়ন আ'লীগের সভাপতি এম,এইচ,নুরুন্নবী চৌধুরী ও জেলা আ'লীগের সদস্য গোলাম মস্তফা তারা নৌকার পক্ষে ভোট চাচ্ছে। সাধারন ভোটারও উন্নয়নে পক্ষে এ অবস্থা ধরে রাখতে পারলে এবারের নির্বাচনে নৌকার জয় আবার নিশ্চিত হবে।
মামুদপুর ইউনিয়নের জিয়াপুর গ্রামের আসলাম হোসেন, রফিকুল ইসলাম, আয়মাপুর গ্রামের জহুরুল ইসলাম, মিনিগাড়ী গ্রামের শাহাদুল ইসলাম বলেন, পাঁচ জন ব্যক্তি চেয়ারম্যান পদে প্রতিদন্দিতা করছেন। তাদের মধ্যে আ'লীগ মনোনীত মশিউর রহমান শামীম শিক্ষিত, বিনয়ীভদ্র, পরীক্ষিত জনবান্ধব তরুণ প্রার্থী। সে নির্বাচিত হলে এলাকার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে।
সাধারণ ভোটারদের অভিমত, উদীয়মান এই তরুন নেতা মশিউর রহমান শামীমকে দ্বিতীয় বার দলীয় মনোনয়ন দেওয়ায় ইউনিয়নের নারী পুরুষসহ তরুন ও নতুন ভোটা’রা ১১ নভেম্বর ভোট কেন্দ্রে গিয়ে নৌকা প্রতীকে ভোট দেয়ার জন্য অধির আগ্রহ প্রকাশ করছেন।
আ'লীগ দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী মামুদপুর ইউনিয়ন আ'লীগের সভাপতি এম,এইচ,নুরুন্নবী চৌধুরী রতন বলেন, আমি চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে দলীয় মনোনয়ন চেয়ে ছিলাম কিন্তু দল আমাকে দেয়নি। তবে দলীয় সিদ্ধান্তের বাহিরে আমি কোন কাজ করবনা। আমার সমর্থকদের নিয়ে নৌকার পক্ষে ভোট চাচ্ছি। তবে দলীয় প্রার্থী বাছায়ে ভুল সিদ্ধান্তের কারনে আজ বিদ্রোহী প্রার্থী সক্রিয়। নৌকার বিজয়ে বাঁধা হতে পারে।