করোনার কারণে দীর্ঘদিন ঘরে আটকে থাকা মানুষেরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার, টুইটার, লিংকডইনের ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে। পোল্যান্ড ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান নেপোলিয়নক্যাটের পরিসংখ্যান বলছে, এ বছরের মে মাস পর্যন্ত বাংলাদেশে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা পাঁচ কোটির কাছাকাছি। যা মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশের বেশি। গণমাধ্যমের তথ্য মতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অংশ বেড়ে যাওয়ায় ব্যক্তিগত তথ্য (জন্ম তারিখ, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর) ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। এতে নাগরিক সুরক্ষা ব্যাহত হচ্ছে, বিভিন্ন প্রতারক চক্র এসব তথ্যের মধ্য দিয়ে নানা অপকর্ম করার সুযোগ পাচ্ছে। অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে প্রতিক্রিয়াশীল চক্র নানা গুজবের ডালপালা গজিয়ে সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। খুব বেশি দিন আগের কথা নয়, কিছু দিন আগে দুর্গোৎসবের সময় কুমিল্লার যে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা শুরু হলো, তা ক্রমান্বয়ে ১৬টি জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। সংখ্যালঘুদের বাড়ি ঘরে হামলা, মন্দির ও প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনায় গোটা জাঁতি স্তম্ভিত। এর আগে রামুতে এবং নাসির নগরেরও এমনই গুজবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করা হয়েছে।
প্রযুক্তির উৎসর্ষতায় মানুষের জীবনে যেমন গতি এসেছে, তেমনি জীবন বিধ্বংসী কিছু দু:খ জনক বার্তার জন্ম হয়েছে। আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটা মাধ্যম যাকে বন্ধ করা যায় না। কাজেই মনিটরিংয়ের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করেছে। কিন্তু দু:খজনক হলেও সত্য এ আইনের অপব্যবহার এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে এ আইন বাতিলের দাবি উঠেছে নানা মহল থেকে। কাজেই নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ নজরদারর মাধ্যমে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের সব উদ্যোগ নষ্ট করতে হবে। নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য যাতে কেউ নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র কিংবা ভুয়া রটনার মাধ্যমে সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে সবাইকে দৃষ্টি রাখতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো খবর পেলেই তা নিয়ে হৈই চৈই না করে সেই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করতে হবে।