বাগেরহাটের শরণখোলার বলেশ্বর নদীর বাঁধ সংলগ্ন ১০৫ নং খোন্তাকাটা ইউনাইটেড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের ছাদে ফল ফুল, সবজি বাগান এবং স্কুল চত্বরে বঙ্গবন্ধু উদ্যান তৈরী সহ বিভিন্ন কর্মকা-ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন প্রধান শিক্ষক ফরিদ আহম্মদ। উপজেলার ১১৪ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে চৌকস এ প্রধান শিক্ষকের কর্মকা-ে স্কুলটি দুইবার উপজেলা পর্যায় শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে সরকারি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ বিদ্যালয়টি অসাধারণ ও অন্যতম বলে মন্তব্য করেছেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বৃন্দ।
১৯৯১ সালে স্থানীয় সমাজ সেবক আলী হোসেন হাওলাদারের নেতৃত্বে এলাকার কোমলমতি শিশুদের শিক্ষা গ্রহণে লক্ষ্যে স্কুলটি স্থাপন করা হয়। ৫ বছর পর ১৯৯৬ সালে বেসরকারি এ স্কুলটি রেজিস্ট্রেশন লাভ করে। ২০০১ সালে বিদ্যালয়টি সরকারি ভাবে পাকা ভবন নির্মাণ হয়। বাড়তে থাকে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। ২০১১ সালে আবার দ্বিতল সাইক্লোন কাম স্কুল ভবন নির্মাণ হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মানসকন্যা শিক্ষা বান্ধব সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি এক ঘোষণায় জাতীয় করন লাভ করে।
স্কুলের পড়াশুনাসহ সার্বিক দিকে নজর দেন প্রধান শিক্ষক ফরিদ আহম্মদ। সহোযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন সহকর্মী শিক্ষক ম্যানেজিং কমিটি। বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা দুশতাধীক। শিক্ষকদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় বাড়তে থাকে শিক্ষার মান। শুরু হয় এ + বৃত্তি লাভ।
স্কুলটি সরেজমিন পরিদর্শন কালে দেখা গেছে স্কুল ভবনের সকল কক্ষে প্যানা এবং ওয়ালে জ্ঞান অর্জনের জন্য মনীষীদের শিক্ষনীয় শতাধীক বানী লিখে সজ্জিত করে। প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সংক্রান্ত বাণী প্যানায় ও ওয়াল লিখনে আকৃষ্ট করেছে। ফুল বাগান তৈরি এবং বৃক্ষ রোপন করে তৈরি করেছেন বঙ্গবন্ধু উদ্যান। ছাঁদ বাগানে ড্রামে মাটি দিয়ে লাগানো হয়েছে আম, পেয়ারা, কুল, লেবু, সফেদা, ডালিম, কমলা, আমড়া, জলপাই, নৈল, এ্যালোবেরা। পানি সেচের জন্য বসানো হয়েছে বৈদ্যুতিক মটর। বিশুদ্ধ পানির জন্য প্রায় চার লাখ টাকা ব্যয় নির্মিত হয়েছে করোসেল সোলার ওয়াটার পিউরিফিকেশন সিস্টেম ট্যাব সুটিং।
সদ্য জাতীয় করনকৃত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদ আহম্মদ বলেন ৫/৬ বছর আগে থেকে ছাঁদ বাগানের কাজ শুরু করেছি। এ ছাঁদ বাগানের দৃশ্য দেখে অনেকে স্কুলে ও বাড়িতে ছাঁদ বাগান করতে উৎসাহিত হচ্ছে। বৃক্ষ রোপন করে তৈরী করেছি বঙ্গবন্ধু উদ্যান। যা শরণখোলার কোন স্কুলে নেই। স্কুলটি ২০১৮ ও ২০১৯ সালে উপজেলা পর্যায় শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে সরকারি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সপ্নের প্রত্যয় বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাকি কর্মজীবন ভালো মানুষ তৈরি করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মুহঃ আশরাফুল ইসলাম মানবকন্ঠকে বলেন, এ বিদ্যালয়টি সার্বিক দিক বিবেচনায় অসাধারণ। প্রতিটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক আন্তরিক ভাবে শিক্ষাবান্ধব সরকারের নির্দেশনা মতে সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালনে ভুমিকা রাখলে শিক্ষার মানোন্নয়নসহ স্কুলের সার্বিক পরিবর্তন সম্বব। যে সব স্কুল ভবনে ছাদের চারদিকে ওয়াল রয়েছে সেখানে ছাঁদ বাগান করা উচিত। তাতে পরিবেশর ভারসম্য রক্ষা পাবে। উপজেলায় অর্ধশত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাকা ভবন রয়েছে। প্রধান শিক্ষক ভুমিকা নিলে ছাঁদ বাগান করা সম্ভব।
উপজেলা রিসোর্স সেন্টার কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, শিক্ষা, নান্দনিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির আন্তরিকতায় বিভিন্ন কর্মকা-ে এ বিদ্যালয়টি অন্যতম। উ জেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহ শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ স্কুলটি পরিদর্শণকালে সবাই প্রসংশা করেছেন।