আসন্ন ইউপি নির্বাচনের প্রত্যেক ধাপের আগে ভোট কেন্দ্রসহ নির্বাচনী এলাকা সমূহে নিরাপত্তা বাহিনীর অস্থায়ী ভাবে সেনা ক্যাম্প স্থাপনের নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সব বিভাগের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি সভাপতি, দীপংকর তালুকদার, এমপি। তিনি বলেন, দ্বিতীয় ধাপে আগামী ১১ নভেম্বর যেসব ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন হবে সেসব এলাকায় অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা তাদের তৎপরতা বাড়িয়ে দিয়েছে। নির্বাচনী এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্যে মাঝে মধ্যে অনেকটা প্রকাশ্যে অবৈধ অস্ত্রের মহড়া দিচ্ছে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। তাদের এই অপতৎপরতার আসল উদ্দেশ্যেই হচ্ছে তাদের মনোনীত প্রার্থীকে জোর পূর্বক জিতিয়ে দেওয়া। এজন্য আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের টার্গেট করে ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও প্রাণনাশের হুমকী দিচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামী লীগ জেলা কার্যালয়ে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রভাবিত করার জন্য রাঙ্গামাটির বিভিন্ন ইউনিয়নে অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী তৎপরতা, প্রার্থীদের হত্যা, অপহরণের অপচেষ্টা প্রতিহত ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন লিখিত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি রহুল আমিন, হাজি কামাল উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মোঃ মুছা মাতব্বর, কৃষক লীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ফিরোজা বেগম চিনু, আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক অভয় প্রকাশ চাকমা, জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রফিক আহমদ তালুকদার, সাবেক রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা প্রমুখ।
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি সভাপতি, দীপংকরতালুকদার, এমপি আরো বলেন, সারাদেশে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন শুরু হয়ে গেছে। তারই ধারাবাহিকতায় ২য় ধাপে আগামী ১১ নভেম্বর থেকে শুরু হতে চলেছে রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি, কাপ্তাই এবং বরকল উপজেলায় ইউপি নির্বাচন। পার্বত্য এলাকার কিছু সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপর প্রচন্ডভাবে নিপীড়ন নির্যাতন চালিয়ে আসছে। তাদের পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলা ও আক্রমনে আমাদের বহু নেতাকর্মী হতাহত হয়েছেন। নির্বাচন আসলে তাদের সন্ত্রাসী তৎপরতা আরো বেড়ে যায়। যেমন চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফশীল ঘোষণার পর থেকে তাদের সন্ত্রাসী তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ১৬ অক্টোবর কাপ্তাই উপজেলার চিৎমরম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি, আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী নেথোয়াই মারমাকে গুলি করে হত্যা করে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। এভাবে তারা আমাদের নেতাকর্মীদের খুন ও জখম করে চলেছে। ২য় ধাপসহ আগামী প্রত্যেক নির্বাচনকে জোর পূর্বক তাদের অনুকূলে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাদের দৌরাত্ম বাড়িয়ে দিয়েছে। তাই আমরা মনে করি তাদের এ ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন নিশ্চিত ভাবে ব্যাহত হবে।
তিনি আরো বলেন, অবৈধ অস্ত্রধারীদের এসব সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বন্ধ করা না গেলে আসন্ন নির্বাচনের নিরপেক্ষতা ও উদ্দেশ্য ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে এবং সন্ত্রাসীরা আরো উৎসাহী হয়ে আগামী সব নির্বাচনে আগের মতো একই পন্থা প্রয়োগ করবে। এতে ভোটাধিকার বঞ্চিত হবে জনগণ, ব্যাহত হবে গণতন্ত্র।
তিনি বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে বিগত দু-এক বছর সন্ত্রাসীদের অপতৎপরতা অনেকটা সংকুচিত হয়েছিল। কিন্তু আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে তারা অধিক শক্তিশালী হয়ে আবার আমাদের নেতাকর্মী ও নিরীহ জনগণকে খুন, জখম এর পাশাপাশি প্রাণনাশের হুমকী, নির্যাতন, ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে নির্বাচনে তাদের প্রার্থীদের জেতানোর জন্য বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, সারাদেশে নিরাপত্তা বাহিনী সন্ত্রাস ও নাশকতা দমনে সফলতা দেখাচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামেও নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে অবৈধ অস্ত্রধারীদের সন্ত্রাস কিছুটা কমে এসেছে। কিন্তু আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে ষড়যন্ত্রকারীদের সন্ত্রাসী তৎপরতা আবার বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা আশাকরি আসন্ন নির্বাচনকে সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহনযোগ্য করার জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর চলমান অভিযান আরো জোরদার করতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য প্রশাসনিক ভাবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করে প্রত্যেক নির্বাচন সম্পন্ন করার অনুরোধ জানান।