ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের পান চাষিরা ভালো নেই। পানের দাম কমে যাওয়ায় চাষিদের মাথায় হাত উঠেছে। পান চাষের জন্য প্রসিদ্ধ কালীগঞ্জ উপজেলা। এখানকার পান দেশ ও বিদেশে রপ্তানি করা হয়। কালীগঞ্জের পানের রয়েছে ব্যাপক চাহিদা,যে কারনে দেশজুড়ে রয়েছে এ অঞ্চলের পানের চাহিদা। এমনকি কালীগঞ্জের পান দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রফতানি হয়ে থাকে। পান চাষে সফলতা পেয়ে এখানকার চাষিরা স্বাবলম্বী হয়েছেন। বিশেষ করে রায়গ্রাম, সালকে, গোপালপুর, দুলালমুন্দিয়া,হেলাই,বলরামপুর, কোলাবাজার এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় বানিজ্যিক ভিত্তিতে পানের আবাদ হয়ে থাকে। অনেকে দাম বেশি পাবার আশায় বরজের পান তুলে ঝুড়িতে করে বিভিন্ন দোকানে দোকানে খুচরা বিক্রি করছে। তুবু তাদের লাভ হচ্ছে না।
তবে এবার ভরা মৌসুমে বাজারে পানের দাম কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তারা। কম চাহিদা আর রপ্তানি প্রায় বন্ধ থাকায় পানির দরে বিক্রি হচ্ছে পান। দাম এতটাই কম যে উৎপাদন খরচও উঠছে না বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। শুক্রবার কালীগঞ্জে হাটে গিয়ে দেখা যায়, ভালোমানের প্রতি পণ (৮০টি) পান বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৪০ টাকায়। পাঁচ টাকা পণেও বিক্রি হচ্ছে কিছু পান। কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এই বছর জেলার ছয় উপজেলায় প্রায় ২ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে পানের চাষ হয়েছে। পান চাষিরা বলছেন এবার পানের যে দাম যাচ্ছে তা গত কয়েক বছরের তুলনায় সবচেয়ে কম। পানের দাম কম হওয়ার কারণে এবার উৎপাদন খরচও উঠছে না। কৃষক ফিরোজ আহম্মেদ বলেন, এক বিঘা পান আবাদ করতে সার, খৈল, বিচুলি, পাটকাঠি, ওয়াসি, শ্রমিকসহ হিসাব করলে ৩ লাখ টাকা খরচ হচ্ছে। তবে বর্তমানে পানের যে দাম যাচ্ছে তাতে ভালো মানের পান হলেও ১ লাখ টাকার বেশি পাওয়া যাবে না। করোনার কারণে গত দুই বছর পান বিক্রি কম হয়েছে। এখন বিক্রি হলেও দাম কম। এভাবে চলতে থাকলে পানের আবাদ বন্ধ করে অন্য আবাদ করা লাগবে বলে পান বরজ মালিকরা জানান। পানের ভালো দাম পেতে এখন সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। ভারত থেকে কিছু পান আসে, সেই পান আনা বন্ধ করতে হবে। আর বিদেশে পান রপ্তানি বাড়াতে হবে।
কালীগঞ্জ বাজারের পান ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলাম ও আকবর আলী বলেন, গত বছরের এই সময়ে যে পান ৭০ থেকে ৮০ টাকা পণ দরে বিক্রি হয়েছিল, সেই পান এখন ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর ১৫ থেকে ২০ টাকা পণের পান বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ১০ টাকায়।
কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপপরিচালক আজগর আলী বলেন, দেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পান রপ্তানি করা হয়। করোনা শুরুর পর থেকে লকডাউনের কারণে পান রপ্তানি বন্ধ ছিল। এখন কিছু পাঠানো হচ্ছে। তবে পরিমাণে কম। আমরা চেষ্টা করছি পানের রপ্তানি বাড়ানোর।