রাজশাহীর মোহনপুরে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের পাঁচজন নেতা-কর্মী। বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় পাঁচজনের মধ্যে তিনজনকে আওয়ামী লীগ দল থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। সোমবার সন্ধার পর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুস সালামের সভাপতিত্বে এক জরুরি সভা করে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. মফিজ উদ্দিন কবিরাজ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি মুঠোফোনে বলেন, দলের সিদ্ধান্ত না মেনে বহিষ্কার হওয়া এসব নেতা-কর্মী বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে লড়ছেন। তাঁদের এর আগে নির্বাচনে অংশ না নিতে বেশ কয়েক বার অনুরোধ করা হয়েছিল। দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তাঁদের সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
আগামী ২৮ নভেম্বর মোহনপুরে ৬টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ২০ জন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বহিষ্কার হওয়া নেতারা হলেন ঘাসিগ্রাম ইউপিতে সাবেক চেয়ারম্যান মো. আফজাল হোসেন বকুল, রায়ঘাটি ইউপিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক শ্রী সুরঞ্জিত সরকার ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. আক্কাস আলী সরদার। বাকশিমইল ইউপিতে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান মো.আল মোমিন শাহ গাবরুকে বহিষ্কার করার জন্য জেলা যুবলীগের সভাপতিকে বলা হয়েছে। জাহানাবাদ ইউপিতে সাবেক চেয়ারম্যান মো. আবদুল লতিফ দলীয় কোনে পদে না থাকায় তাকে বহিষ্কার করা হয়নি।
তবে সাময়িক বহিষ্কার হওয়া তিন নেতা-কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁরা এখনো বহিষ্কারের কোনো চিঠি পাননি। বিষয়টি শুনেছেন। রায়ঘাটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শ্রী সুরঞ্জিত সরকার বলেন, ‘আমি ছোট থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। দল করি মানুষের জন্য। তাঁদের সুখে-দুঃখে পাশে থাকার জন্য। গত ইউপি নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলাম। বিদ্রোহী প্রার্থীর কাছে পরিকল্পভাবে আমাকে পরাজিত করা হয়েছিল। এবার ওই বিদ্রোহী প্রার্থীর ছেলে মো. বাবলু হোসেন নৌকার প্রতীক পেয়েছেন। সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে তিনি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবেন বলে জানান। বহিষ্কারের বিষয়ে তিনি বলেন, নিজেই পদত্যাগের আবেদন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের জমা দিতে গিয়েছিলাম। তিনি পদত্যাগপত্র গ্রহণ না করায় গত ২ নভেম্বর পোস্টের মাধ্যেমে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে। ঘাসিগ্রাম ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান মো. আফজাল হোসেন বকুল বলেন, আমি আওয়ামী লীগ দলের কোন পদে নেই। গত ২০১৬ সালে ইউপি নির্বাচনের আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। ওই দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী বলেন, তাদেকে বহিষ্কারের প্রশ্নই আসে না। মোহনপুর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যানপদে ২০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আগামী ২৮ নভেম্বর ভোট গ্রহন হবে।