রাজবাড়ী সদর উপজেলায় আওয়ামী লীগের নেতা সাবেক চেয়ারম্যানকে গুলি করে হত্যা মামলার পাঁচ আসামীর দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) মেহেদী হাসান।
বুধবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে রাজবাড়ী এক নম্বর আমলী আদালতের বিচারক সুমন হোসেন এই আদেশ দেন।
নিহতের নাম আবদুল লতিফ মিয়া (৫৭)। তিনি বানিবহ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি। চতুর্থধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় চেয়ারম্যান পদের প্রত্যাশী ছিলেন। তাঁর বাড়ি মহিষবাথান গ্রামের পুকুরচালা এলাকায়।
বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) দিবাগত রাতে গুলি ছোঁড়া হয়। নিহতের স্ত্রী শেফালী আক্তার বাদী হয়ে আটজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করে শনিবার দিবাগত রাতে ১২টা ২৫ মিনিটে রাজবাড়ী সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ গত রোববার সদর উপজেলা বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচজন হলেন, বানিবহ গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে মোর্শেদ ও আবুল হোসেনের ছেলে সীমান্ত, ঘিমোড়া গ্রামের হাসেম মোল্লার ছেলে মনির মোল্লা, বার্থা গ্রামের আহান আলী মুন্সীর ছেলে ইসমাইল মুন্সী ও বৃচাত্রা গ্রামের জুবায়েবের ছেলে জাকারিয়া।সামবার বিকেলে তাদের রাজবাড়ী আদালতে পাঠানো হয়। এ সময় আসামীদেও সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। বুধবার এ বিষয়ে শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেককে দুইদিন করে রিমান্ড আদেশ মঞ্জুর করেন।
এজাহার ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, নিহত আবদুল লতিফ মিয়া সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। চতুর্থধাপের নির্বাচনে তিনি দলীয় চেয়ারম্যান পদ প্রত্যাশী ছিলেন। এলাকায় তাঁর জনপ্রিয়তার কারণে মাঝেমধ্যেই হত্যার হুমকি দেওয়া হতো। তিনি নিরাপত্তার জন্য মোহাম্মদ আলীর মেয়ের জামাত মেহেদী হাসানসহ কিছু ব্যক্তি সঙ্গে নিয়ে চলাফেরা করতেন। ১১ নভেম্বর তিনি নির্বাচনী কার্যক্রম সম্পন্ন করে রাত ১১.৫০ মিনিটে বানিবহ বাজার থেকে মোটরবাইকে মেহেদী হাসানের সঙ্গে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। তিনি রওনা দেওয়ার পর বিদ্যুৎ চলে যায়। তিনি মেহেদী হাসানকে নামিয়ে দেওয়ার পরেই আগে থেকে ওতপেতে থাকা দুর্বৃত্তরা তাঁর ওপর হামলা চালায়। এ সময় সামনে থেকে তাকে সামনে থেকে দুটি গুলি করা হয়। তিনি মোটরসাইকেল নিয়ে এগুতে থাকলে পিছন থেকে আরও তিনটি গুলি করা হয়। এতে করে আবদুল লতিফ মাটিতে পড়ে গিয়ে চিৎকার করতে থাকেন। এ সময় হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ও রাতেই ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। পথে তিনি হামলাকারীদের নাম বলেছেন যা মোবাইল ফোনে রেকর্ড করা আছে। ভোর ৪টার দিকে মানিকগঞ্জের মুন্নু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।