ময়মনসিংহের গৌরীপুরের অনুষ্ঠিতব্য ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তৃণমূলে বর্ধিত সভা করে একাধিক প্রার্থীর নাম প্রস্তাবের কথা থাকলেও সে নিয়ম মানা হচ্ছেনা বলে অভিযোগ করেছেন সিধলা ইউনিয়নের দলীয় অন্যান্য নেতাকর্মীরা। তাদের অভিযোগ সিধলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বর্ধিত সভা আয়োজন না করেই কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে সিধলা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে সভাপতি নিজেই প্রার্থী হয়েছেন। ইতোমধ্যে উপজেলা, জেলা ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগে তালিকা প্রেরণ করায় সিধলা ইউনিয়নে তৃণমূল আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও অন্যান্য প্রার্থীদের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার তৈরী হয়েছে। এ ঘটনায় অনেকেই হতবাক ও ক্ষুব্ধ।
অভিযোগে জানা যায়, সিধলা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী নির্বাচনের পূর্বে কোন প্রকার যাচাইবাছাই না করে এবং বর্ধিত সভা আয়োজন না করেই সাধারণ সম্পাদককে রাজি করিয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নিজেই প্রার্থী হয়েছেন। এক্ষেত্রে কোনপ্রকার দলীয় মতামত নেয়া হয়নি। যোগ্য আরও কয়েকজন প্রার্থীর নাম ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দিয়ে শুধুমাত্র একক প্রার্থীর তালিকা তৈরী করে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনা জানাজানি হলে দীর্ঘদিন ধরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ত্যাগী নেতাকর্মীরা বিষ্ময় প্রকাশ করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক পদধারীরা জানান, এ ধরনের কাজে দলীয় ভাবমূর্তিকে ক্ষুন্ন করেছে এবং দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত দাবী করেন তারা। সেই সাথে তৃণমূলের সকলের মতামতের মাধ্যমে সঠিক এবং যোগ্য প্রার্থীদের তালিকা প্রস্তুত করে দ্রুত সময়ে পাঠানোর দাবী জানান তারা। সেই তালিকার প্রেক্ষিতে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা যে প্রার্থীকে মনোনয়ন দিবেন তারা সবাই সেই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করে নৌকাকে বিজয়ী করার চেষ্টা করবেন।
সিধলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ খোকন বলেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি/সম্পাদক নিজের পছন্দের লোকদের নিয়ে ঘরোয়া ভাবে বসে অন্য সদস্যদের মতামত উপেক্ষা করে তারা একজনের নাম পাঠায়। আমাদের এ বিষয়ে জানানো হয়নি।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোর্তজ আলী তালুকদার জানান, সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক দলীয় আইন না মেনে বর্ধিত সভার বদলে ঘরোয়া পরিবেশে স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নিজেই প্রার্থী হয়েছেন এবং ইচ্ছাকৃতভাবে ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে অন্য কোন প্রার্থীর নাম সে তালিকায় অন্তর্ভূক্ত না করে অগণতান্ত্রিক আচরণ করেছেন। এ ধরনের কর্মকান্ত দলীয়ভাবে আওয়ামীগকে ক্ষতিগ্রস্থ করবে।
এ বিষয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান বলেন, সবাইকে জানিয়ে দলীয় কার্যালয়ে বর্ধিত সভা করা হয়েছে। সেই সভায় মান অভিমানে যদি কেউ না আসে তাহলে আমাদের কি করনীয়। তবে আমরা যা করেছি তা দলীয় নিয়ম মনেই করেছি।
এ বিষয়ে জানতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জয়নাল আবেদীন জানান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৬১ সদস্যের কমিটি এরমধ্যে বেশ কয়েকজন মারা গেছেন। বর্তমানে কমিটিতে রয়েছে ৫০/৫২জন। এরমধ্যে ১২ নভেম্বরের বর্র্ধিত সভায় ৪০/৪৫ জনের উপস্থিতির স্বাক্ষর রয়েছে। আমরা সমস্ত নিয়ম মেনেই সভা করেছি।
এ বিষয়ে গৌরীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বলেন, বর্ধিত সভা করেই তালিকা পাঠানো হয়েছে বলে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। দলীয় অন্যকোন প্রার্থী না থাকায় একক প্রার্থীর নামের তালিকা জেলা আওয়ামী লীগে জমা দেয়া হয়েছে। বর্ধিত সভা না করেই নামের তালিকা পাঠানো হয়েছে এমন একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং জেলা আওয়ামীলীগকেও বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।