ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের পরিবেশকে বিঘ্নিত ও নষ্ট করার চেষ্ঠা করলে সে-যে-কেউ হোক তাকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে কঠোর হুশিয়ারি দিয়েছেন বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম। দরকার হলে এমপিদের ক্ষেত্রেও নমনীয় হবে না নির্বাচন কমিশন। তিনি বলেছেন, আমি রাজশাহীর মানুষ হিসেবে বিশ্বাস করি, নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের সদিচ্ছা থাকলে কোন প্রকার ঘটনা ঘটবে না। ভোট হবে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ।
সোমবার বিকালে মোহনপুর উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, ইউপি নির্বাচনে বিপুল সংখ্যক বিডিআর, বিজিবি, র্যাব, পুলিশ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন করা হবে। কাউকে মারার ও পক্ষালোম্বনের জন্য নয়, সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় সে কারণে তাদের মোতায়েন করা হবে। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ভোটকেন্দ্রে কেউ লুট করতে এলে পুলিশ বসে থাকবে না, পুলিশ কঠোর ব্যবস্থা নিবে।
তিনি আরো বলেন, ‘নাগরিকের ভোট, ভোটের সরঞ্জাম রক্ষা ও সংশ্লিষ্টদের নিরাপত্তার জন্য বিধান রয়েছে। নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করতে সরকার সব রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সন্ত্রাসী ও বিশৃঙ্খলাকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না।’ তিনি প্রার্থীদের উদ্দেশ্য বলেন, কারো দ্বীর্ঘশ্বাস নিয়ে নির্বাচিত হবেন না। নিজেদের গায়ে দ্বীর্ঘশ্বাস লাগতে দিয়েন না। আমরা কিন্তু কাউকে ছাড়বো না। পাশাপাশি তিনি বলেন, ভোট সংশ্লিষ্টরা কোন স্বজনপ্রীতি ও স্বজনের আপ্যায়ন ও পক্ষপাতপুষ্ট হলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
রাজশাহী জেলা পুলিশের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বিপিএম বার বলেন, ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যাতে অবাধে যেতে পারেন, তার সব ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রিজাইডিং অফিসারদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা সততা,দক্ষতা ও নিরপেক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করবেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দেখবো আমরা। কিন্তু ভিতরের অবস্থা দেখবেন আপনারা। সবায় এক সাথে নিরপেক্ষ কাজ করলে ২৮ তারিখের নির্বাচন হবে সুষ্ঠু ও অবাধ।
অনুষ্ঠানের সভাপতি জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবদুল জলিল বলেন, ভোটগ্রহণ শেষে দ্রুততম সময়ে ভোট গণনা করে কেন্দ্রে ঘোষণা দিয়ে উপজেলায় রিপোর্ট করবেন। বেলা পাঁচটায় ভোটগ্রহণ শেষ হলেও অনেক কেন্দ্রে দেখা যায় রাত ১০টা বাজলেও ভোটগণনা শেষ হয়না। এসব কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসাররা বিপাকে পড়েন। পাশাপাশি নানা রকম গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এতে ভোটের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়। তখন অযাতিত উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রশাসনকে বেগ পেতে হয়। তাই ঝুঁকি না নিয়ে দ্রুততার সাথে ভোট গণনা করে ঘোষণা করবেন।
মোহনপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. জয়নুল আবেদীনের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাজশাহী অঞ্চলের নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও মো. সানওয়ার হোসেন, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. তৌহিদুল ইসলাম। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার মো. সাইফুল ইসলাম, রিটার্নিং কর্মকর্তা জেবানুর রহমান ও মো.রোকরুজ্জামান তালুকদার।