চারঘাটে 'ব্যাকটেরিয়া উইল্ড' নামক রোগের আক্রমণে শুকিয়ে মারা যাচ্ছে বাগানের পেয়ারা গাছ। বিভিন্ন ধরনের ছত্রাক প্রতিষেধক ব্যবহারেও মিলছে না সুফল। রোগের সংক্রমণে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
জানা যায়, চারঘাট উপজেলায় ১৮০ হেক্টর জমিতে পেয়ারা বাগান রয়েছে। সম্প্রতি উপজেলার থাই পেয়ারা বাগানে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে গাছ শুকিয়ে মারা যাচ্ছিল। প্রথম দিকে কৃষকরা বিষয়টি আমলে না নিয়ে সাধারণ কীটনাশক ব্যবহারে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব বলে মনে করলেও সম্প্রতি তা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। এমনকি কৃষি সম্প্র্রসারণ বিভাগের দ্বারস্থ হয়েও মিলছে না প্রতিকার।
রাওথা গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, চার বছর ধরে পেয়ারা বাগানের চাষ করছি। এর আগে গাছের বয়স ৫ থেকে ৬ বছর হলে সাধারণত মারা যেত। এই বছর আমার সাত বিঘা জমিতে পেয়ারা চাষ শুরু করেছি। অনেক গাছের পাতা শুকিয়ে মারা যাচ্ছে। গত ২০ দিনে বাগানের ৪০টি গাছ মারা গেছে। উপজেলা কৃষি অফিসে যোগাযোগ করেও কোনো ফল পাইনি।
নিমপাড়া এলাকার পেয়ারা চাষি খায়রুল ইসলাম বলেন, আগের পুরাতন গাছ কেটে ফেলে নতুন পেয়ারা বাগান করেছি। কিন্তু গাছের বয়স তিন-চার হতেই কিছু গাছের পাতা শুকিয়ে মারা যাচ্ছে। জমি লিজ নিয়ে পেয়ারা বাগান করেছও। এ অবস্থায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামীম আহম্মেদ জানান, এই ধরনের রোগকে বৈজ্ঞানিক ভাষায় ব্যাকটেরিয়া উইল্ড বলে। এই রোগে আক্রান্ত গাছের ভেতরে জাইলেন্স লিজন লক হওয়ার কারণে শিকড় দিয়ে পানি ও খাবার নিতে না পারার কারণে গাছ দ্রুত শুকিয়ে মারা যায়। কিছু জৈব জীবাণুনাশক ওষুধ প্রয়োগ করলে উপকারী ব্যাকটেরিয়া মাটির কার্যকারিতা কিছুটা বাড়ায়। তবে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা যায়, গাছটি মাটি থেকে উঠিয়ে চুন দিয়ে মাটি শোধন করে নতুন গাছ লাগালে ঝুঁকি কম থাকে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মদ বলেন, পেয়ারা অর্থকারী ফসল হওয়ায় এই উপজেলায় পেয়ারা চাষ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। পেয়ারা চাষীদের সাথে কথা বলে তাদের রোগ বালাই সম্পর্কে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।