বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, সরকার বিএনপি নেন্ত্রী খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করছে। খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় বাঁধা দিয়ে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। দেশের যতো আইন খালেদার জিয়ার ও বিএনপির জন্য। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসার দাবিতে মঙ্গলবার দুপুরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত ময়মনসিংহে বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সমাবেশে তিনি আরো বলেন, দেশের বহু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির আত্মীয়স্বজনদের বিদেশে বিদেশে থাকা লোককে মাফ করে দিয়েছেন। আপনাদের দলের ও সরকারের অনেক ব্যক্তির সন্তানদের জেলে যেতে হয়নি। তাদের দ- মওকুফ করে দেয়া হয়েছে। আপনাদের বেলায় চলবে আর খালেদা জিয়ার বেলায় চলবে না। তাঁর কী দেশের জন্য অবদান কম? তাঁর স্বামী মুক্তিযুদ্ধের সময় নেতৃত্ব দিয়েছেন। স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়েছেন। তিনি দুই শিশু পুত্র নিয়ে পাকিস্তানী হানাদারের কারাগারে আবদ্ধ ছিলেন।
নজরুল ইসলাম খান আরো বলেন, আপনাদের সময় দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছে। আপনারা বাকশালের নামে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছেন। আপনার সময়ই খন্দকার মোসতাক দেশে প্রথম সামরিক আইন জারি করে। আপনারই প্রথম জরুরি অবস্থা জারি করেছেন। আপনারাই প্রথম বিশেষ ক্ষমতা আইন করেছেন। গণবিরোধী সবকিছুই আপনারা করেছেন। বিএনপির বিরুদ্ধে এমন কোনো অভিযোগ নেই। বরঞ্চ বিএনপি একদলীয় শাসনের অবসান ঘটিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। সামরিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে সংসদীয় গণতন্ত্র ব্যবস্থা চালু করেছেন। বিএনপি ১/১১ সরকারকে বাধ্য করেছে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করতে। বারবার গণতন্ত্র বিএনপি ফিরিয়ে দিয়েছে। আপনারদের সবার এবং দেশের গণমানুষের সহযোগিতায় আগামীতে দেশের মানুষের হারানো গণতান্ত্রিক অধিকার বিএনপিই ফিরিয়ে দিবে। তিনি বলেন, জনগণ যাতে ভোট দিতে না পারে সেজন্য বিএনপি নির্বাচনের অংশ না নিলে প্রার্থী পাওয়া যায়না আর নির্বাচনে অংশ নিলে ভোটাররা ভোট দেওয়া লাগে না। ভোট চোর ভোট চুরি করছে, শেয়ার মার্কেট লুট করে নিয়েছে, সমস্ত ব্যাংক ফোকলা করে দিয়েছে। দুর্নীতি অনাচার সীমাহীন। ক্যাসিনো ব্যবসা, খাটের নিচে মাটির নিচে কোটি কোটি টাকা। ফরিদপুরে ছাত্রলীগ নেতার কাছ থেকে দুই হাজার কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। এসব টাকা কার?
মহানগর বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক এ কে এম শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলম ও ওয়ারেস আলী মামুন, ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি ডা. মাহাবুবুর রহমান লিটন, শেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি ডা. মাহমুদুল হাসান রুবেল, সাধারণ সম্পাদক শামীম তালুকদার, নেত্রকোনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডা. আনোয়ারুল হক, সদস্য সচিব ডা. রফিকুল ইসলাম হেলালী, কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজার ইসলাম, শেরপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হযরত আলী, সাবেক এমপি শাহ শহীদ সারোয়ার, আবদুল বারী ড্যানী, ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক শেখ আমজাদ আলী, কাজী রানা, দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর মাহমুদ আলম, ফখরুদ্দিন আহমেদ বাচ্চু, উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল বাসার আকন্দ, কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-সভাপতি আবদুল খালেক হাওলাদারসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ। সমাবেশ পরিচালনা করেন ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক জাকির হোসেন বাবলু, মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ওয়াহাব আকন্দ ও উত্তর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার। ময়মনসিংহ, জামালপুর, নেত্রকোনা ও শেরপুর জেলা ও বিভিন্ন উপজেলা এবং মহানগর ও পৌরসভা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ মঞ্চের সামনে উপবিষ্ট ছিলেন।