বাংলাদেশের একটি অন্যতম পর্যটন সমৃদ্ধ নগর হলো কক্সবাজার। কক্সবাজার বিমানবন্দরে প্রতিদিন ৪০টি যাত্রীবাহী ফ্লাইট ওঠানামা করে। দিন দিন এই নগরের পর্যটন সম্ভাবনা বাড়তে থাকায় দিন দিনই বাড়ছে যাত্রীসংখ্যা। বাড়ছে ফ্লাইটের সংখ্যা। বিমানবন্দরটিকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীত করার লক্ষ্যে উন্নয়নকাজও এগিয়ে চলেছে। অথচ বিমানবন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থা রয়ে গেছে খুবই দুর্বল। শত শত মানুষ সড়কের মতোই রানওয়ের ওপর দিয়ে হেঁটে চলাচল করে। গরু-ছাগল চড়ে বেড়ায়। সম্প্রতি সেখানে একটি যাত্রীবাহী বিমান ভয়ংকর দুর্ঘটনা থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে। বিমানটির পাখায় ধাক্কা লেগে দুটি গরু মারা গেলেও বিমানের বড় কোনো ক্ষতি হয়নি। যাত্রীদেরও কোনো ক্ষতি হয়নি। এ ঘটনায় চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সে সময় কর্তব্যরত চার আনসার সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির বৈঠক থেকে বিমানবন্দরের চার পাশে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এই অবস্থার পরিবর্তন কতটা হবে তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়।
জানা যায়, বিমানবন্দরের রানওয়েতে সেই পুরনো দৃশ্য দেখা যাচ্ছে এখনো। অর্থাৎ শত শত মানুষ হাঁটাচলা করছে। গরু-ছাগল-কুকুর-বিড়াল ঘুরে বেড়াচ্ছে। অতীতেও এখানে অনুরূপ দুর্ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু বিমানের নিরাপত্তায় কার্যত কিছুই করা হয়নি। প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, বুধবার বাংলাদেশ বিমানের আরেকটি ফ্লাইট অল্পের জন্য দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। ল্যান্ডিং গিয়ারে ত্রুটি দেখা দেওয়ায় বিমানটি একাধিকবার চেষ্টা করেও চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে পারেনি। প্রায় এক ঘণ্টা আকাশে উড়ে বেড়ানোর পর চালক কোনো রকমে বিমানটিকে অবতরণ করাতে সক্ষম হন। বিমানটিতে তখন ৪২ জন যাত্রী ও চারজন ক্রু ছিলেন। এমন দুরবস্থায় বিমানের অভ্যন্তরে থাকা যাত্রীরা কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছিলেন বলে জানা যায়। প্রশ্ন হলো, উড্ডয়নের আগে বিমানের যান্ত্রিক দিকগুলো সঠিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছিল কি?
অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো দেশের পরিবর্তনের চাহিদাগুলো সঠিকভাবে অনুধাবন করতে পারছে না। অথচ আসন্ন পরিবর্তনগুলোর সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলা খুব জরুরি হয়ে উঠেছে। সরকার দেশের বিমান পরিবহনব্যবস্থার দ্রুত উন্নয়ন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এটাই প্রত্যাশা।