ফরিদপুরে দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে উচ্চ ফলনশীল ও বন্যা সহিষ্ণু বায়ারের এরাইজ এজেড-৭০০৬ ধান চাষ। বন্যা সহিষ্ণু হওয়ায় কৃষকের মাঝে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে এই জাতের বোনা আমন ধান।
চলতি আমন মৌসুমে জেলায় প্রায় ১০ হাজার হেক্টোর জমিতে চাষিরা পাট ক্ষেতের মধ্যে বোনা আমন চাষ করে সাফল্য পেয়েছে। রোপা আমনের চেয়ে বোনা আমনে চাষিদের খরচও কম পড়ে তুলনামূলক ভাবে। রোপা আমন চাষে চাষিদের আগে উঁচু জমিতে বীজ তলা করার প্রয়োজন হয়। বীজ তলার চারা তৈরী ও বীজ তলা থেকে চারা তোলার বাড়তি খরচেরও প্রয়োজন হয়। আর বোনা আমনের ক্ষেত্রে বীজতলা তৈরী, জমি চাষ, ধান লাগানো,পানি সেচ, অন্যান্য কিছুই দরকার হয় না। একই সাথে মাটির ক্ষয়রোধ এবং কার্বন নিঃসরণ রোধের মাধ্যমে পরিবেশ দূষণকে প্রতিরোধ করে। অন্যদিকে রোপা আমন ধানের চেয়ে, আগেই বোনা আমন ঘরে তুলা জায়। এতে বোনা আমন চাষ করে চাষিরা অধিক লাভোবান হতে পারে। চলতি বোর মৌসুমে ফরিদপুরের চাষি বায়ার ক্রপ সায়েন্স এর উদ্ভাবিত হাইব্রিড উচ্চফলনশীল এ্যারাইজ এজেড-৭০০৬ জাতের ধান পাট কাটার ১৫-২০ দিন আগে পাটের জমিতে ছিটিয়ে বপন করে। পাট কাটার পর ছিটিয়ে বোনা ধানে ক্ষেত ভোরে উঠে। এখানে সেচের কোন প্রয়োজন হয় না, অল্প পরিমানে সার, অষুধ ও পরিচর্যায় বাম্পার ফলন পায় চাষিরা।
চাষিরা জানায়, আগে আমরা স্থানীয় জাতের ধান চাষ করতাম। তাতে খরচের টাকাই উঠত না। আর এখন আমরা উচ্চ ফলনশীল এ্যারাইজ এজেড-৭০০৬ জাতের ধান চাষ করে অধিক ফলন পাচ্ছি। এই ধানের বীজ দিয়ে সহযোগিতা করছেন বায়ার ক্রপ সায়েন্স লিমিটেড।
ফরিদপুরের আঞ্চলিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো: মানছুর রহমান বলেন, আমাদের দেশে দিন দিন কৃষি জমির পরিমার কমে যাচ্ছে। সেই কারণে দেশের খাদ্যের খাটতি কমাতে অল্প জমিতে অধিক ফলন হয় সেই ধরনের ধান চাষাবাদে কৃষকদের আমরা বীজ ও পরামর্শ প্রদান করছি। কৃষকরা এই ধান ধাষ করে অধিক লাভোবান হচ্ছে।
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ ড. মো: হজরত আলী বলেন, এইজাত সম্প্রসারণ করতে পারলে গতানুগতিক ধানের চেয়ে বেশি ফলন পাবে। এই ধান চাষ করলে উফসী এবং স্থানীয় জাতের চেয়ে ফলন বেশি পাবে চাষিরা। তাই এই ধান চাষের মাধমে খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন হওয়ার ক্ষেত্রে আরো একধাপ এগিয়ে যাবে দেশ।