শিশু কুসুম আক্তার অপরহরণ মামলায় ১৯৯৭ সালে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ- হয় মিলন কামালের। তখন তিনি যুবক। নিজ এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় তাকে। যাবজ্জীবন (৩০ বছর) সশ্রম সাজা হওয়ার পর ছিলেন লক্ষ্মীপুর কারাগারে। ২৪ বছর কারাভোগের পর সশ্রম কারাদ- হওয়ায় মওকুপ পান ৬ বছরের সাজা। সম্প্রতি লক্ষ্মীপুর কারাগার থেকে মুক্তি পান মিলন। কারামুক্তির পর বৃদ্ধ মাকে নিয়ে অসহায় জীবনযাপন করছিলেন তিনি। সেই কারামুক্ত মিলন কামালের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিলেন লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ। ০৭ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) বিকেলে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ওয়াপদা অফিসের পাশে তাহমিদ সুপার মার্কেটে কারামুক্ত মিলনের জীবিকা নির্বাহের জন্য একটি সেলুন দোকান উপহার দেওয়া হয়। লক্ষ্মীপুর সমাজসেবা কার্যালয়ের পক্ষ থেকে এ উপহার তুলে দেন জেলা প্রশাসক।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, লক্ষ্মীপুর কারাগারের জেল সুপার মোহাম্মদ রফিকুল কাদের, জেলার সাখাওয়াত হোসেন, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম পাটওয়ারী প্রমুখ। ২৪ বছর আগের ঘটনা মনে করেন কারামুক্ত মিলন কামাল। তিনি বলেন, একটি অপহরণ মামলায় ১৯৯৭ সালে কারাগারে যান। তখন বিয়ের বয়স ২/৩ বছর। সাজা হওয়ার ৫ বছর পর স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যায়। একমাত্র সন্তানটিও মারা যায়। কারামুক্তির পর নিঃস্ব মিলন বৃদ্ধ মাসহ বাকি জীবন নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন। বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানালে তিনি এখন সেলুন দোকান দিয়ে আমার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছেন। দোকানের নাম দিয়েছি মায়ের নামে।
স্থানীয়রা জানায়, মিলন কারামুক্তির পর দুশ্চিন্তায় ছিলেন। এখন তার দোকান হয়েছে। আমরা ভাল জীবন-যাপনে তাকে সহযোগিতা করবো।
সমাজ সেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম পাটওয়ারী বলেন, 'সমাজসেবা বিভাগের অপরাধী সংশোধন ও পুনর্বাসন সমিতির পক্ষ থেকে কারাগারে এ ধরনের প্রশিক্ষণ ও জীবিকা নির্বাহের সরঞ্জাম দিয়ে সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বাড়ি ফিরে যাতে তাঁরা সম্মানের সঙ্গে কাজ করে বেঁচে থাকতে পারেন, সে লক্ষেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।'
লক্ষ্মীপুর কারাগারের জেলার সাখাওয়াত হোসেন বলেন, কারাগারে সেলুনের কাজ করতো মিলন। আচার-আচরণ ভাল ছিল। এই দোকানের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে সহযোগিতা করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ বলেন, 'মিলন আক্তার ২৪ বছর জেল খেটেছেন। তিনি যেন আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারেন। যাঁরা অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাঁদের আমরা সুপথে ফিরিয়ে আনব।