ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে নির্বাচনের ১৩ দিন পর পরাজয়ের জন্য প্রশাসনকে দায়ী করলেন নৌকার প্রার্থী অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম গাজী। শফিক অরূয়াইল ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক। এ ছাড়াও তিনি ইউনিয়ন ছাত্রলীগ ও আওয়ামী য্বুলীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন। শনিবার বিকেলে সরাইল প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবী করে প্রশাসনের বিরূদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ধরেন তিনি। তার দাবী লাঙ্গলের প্রার্থীর যোগসাজসে প্রশাসন গভীর ষড়যন্ত্র করে তাকে পরাজিত করেছেন। সকল অনিয়ম দূর্নীতির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে লিখিত ভাবে জানিয়েও কোন ধরণের প্রতিকার পাননি তিনি। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গত ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে অরূয়াইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে পরাজিত সরকার দলীয় প্রার্থী শফিকুল ইসলাম গাজী। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, নির্বাচনের শুরূ থেকেই উপজেলা প্রশাসন আমাকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে আসছিলেন। নির্বাচনের দিন সকাল থেকে ভোট গণনা পর্যন্ত প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের সদস্যরা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে নৌকা সমর্থিত ৪টি কেন্দ্রে উপস্থিত থেকে কিছুক্ষণ পরপর জনতাকে ধাওয়া করে সরিয়ে দেয়। নৌকার বেইজ পড়া লোক দেখলেই প্রশাসন দৌড়াইয়া মারধর করেছে। এতে ভোটার ও সমর্থকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। নৌকার প্রধান এজেন্ড ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি মো. আবু তালেবকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওঁর দফতরে ডেকে আনেন। সকাল ১১টা থেকে বিকাল ২টা পর্যন্ত ইউএনও’র দফতরেই তাকে অবস্থান করতে হয়েছে। আমার প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থীরা এলাকায় প্রচার করেছেন আবু তালেবকে গ্রেপ্তার করেছে প্রশাসন। এর ফলে নৌকার কর্মী সমর্থকরা ভয়ে আরো গুটিয়ে যায়। সুযোগে লাঙ্গল প্রতীকে প্রবাসী ও মৃত ব্যক্তিদের অসংখ্য জাল ভোট পড়ে। নির্বাচনের আগের রাতে ধামাউড়া ও দুবাজাইল গ্রামে আচরণবিধি লঙ্ঘণ করে লাঙ্গলের কর্মীরা মিষ্টি নগদ টাকা দিয়ে নৌকার সকল ভোট ক্রয় করেন। এ সকল বিষয় রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ইউএনও মহোদয়কে অবগত করেছি। ওঁরা শুধু দেখছি বলেই শেষ। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে শফিক বলেন, ২ কেন্দ্রে আমার পোলিং এজেন্ডকেও সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত আটক করে রাখা হয়েছে। ৩০-৩৫ জন সমর্থককে মারধর করে আহত করেছে। প্রশাসন ছিল নৌকার বিপক্ষে। লাঙ্গলের প্রার্থী দেখা করার সুযোগ পেলেও আমাকে জেলা প্রশাসক মহোদয় সাক্ষাতের সুযোগ দেননি। ওয়ার্ড আ.লীগ কমিটির ১৮ জনের মধ্যে মাত্র ৪ জনকে পেয়েছি। ইউনিয়ন কমিটির সদস্যদের মধ্যে সভাপতি ছাড়া অন্যরা শুধু লোক দেখানো বক্তব্য দিয়েছেন। গোপনে কাজ করেছেন নৌকার বিপক্ষে। উপজেলা আ.লীগের আহবায়ককে ২টি সভায় পেয়েছি। আর কাউকে পায়নি। রাণীদিয়ার গ্রামের বাসিন্ধা কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য নাজিম উদ্দিন ভাসানীর কেন্দ্রে ৩ হাজার ৮০০ ভোটের মধ্যে নৌকা পেয়েছে মাত্র ২২ ভোট। শফিকুল ইসলাম অরূয়াইল ইউনিয়নে পুণ:নির্বাচনের দাবী জানিয়েছেন। সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আরিফুল হক মৃদুল বলেন, আমরা শুধু প্রশাসনিক বিষয়টি দেখেছি। নির্বাচনের বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের। কোন প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী যদি মনে করেন নির্বাচনে কোন ধরণের পক্ষপাতিত্ব ও অনিয়ম হয়েছে। তবে তিনি নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হতে পারেন।