দিন দিন সরিষা চাষে আগ্রহ বাড়ছে শেরপুরের নকলা উপজেলার কৃষকদের। দিগন্তজুড়ে যতদূর চোখ যায় শুধু হলুদ আর হলুদ।প্রকৃতি যেন হলুদ শাড়ী পরিদান করে আছে।হলুদের চাদর মোড়ানো যেন প্রকৃতির দিগন্তজুড়ে সরিষা ফসলের মাঠ।আমন ধান কাটার পর বাড়তি ফসল হিসেবে সরিষার মূল্য চড়া হওয়ায় কৃষকদের সরিষা চাষে আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিকে উপজেলা কৃষি বিভাগ জানান, সরিষা আবাদে আগ্রহ বৃদ্ধি করতে চাষীদের দেওয়া হচ্ছে প্রনোদনা ও নিয়মিত পরামর্শ। শেরপুরের নকলা উপজেলার চন্দ্রকোনা, চরঅষ্টধর, উরফা ও নকলা ইউনিয়নে সরিষার আবাদ বেশি হয়ে থাকে।উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, গত বছর নকলা উপজেলায় ১৬শ ৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। আর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ হয়েছিল ১৮শ ৫০হেক্টর জমিতে। এবছর ২৬শ ৫০হেক্টর জমিতে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর আবাদ হয়েছে ২২শ ৫০ হেক্টর জমিতে। এবার কৃষকরা স্থানীয় জাতের পাশাপাশি বারি সরিষা-১৪, ১৫, ১৭, বিনা-৯, ৪ ও ১১, টরি-৭ জাতের সরিষার আবাদ করে লাভের মুখ দেখছেন। নভেম্বর মাস থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত এ সরিষা চাষের উপযুক্ত সময়। তাই এ সময় সরিষার ফুলে ভরে গেছে ফসলের মাঠ। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে সরিষা চাষে এবার বাম্পার ফলনের সম্ভবনা রয়েছে।বর্তমানে কৃষকরা সরিষার ফলন দেখে খুশিতে আটখানা। বেশকয়েক জন সরিষা চাষী সাথে আলাপচারীতায় জানাযায়, গত কয়েক বছর ধরেই ধান চাষে তেমন একটা লাভ হয় না। আর এ কারণেই ক্ষতি পুষিয়েনিতে সরিষা চাষে ঝুকে পড়েছি। তাই বিকল্প এবং বাড়তি ফসল হিসেবে অন্য ফসলের পাশাপাশি পতিত জমিতে সরিষা চাষের প্রতি আগ্রহী হয়েছি।তারা আরো জানান, প্রতিবারের ন্যায় এবারও উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ নিয়ে সরিষার আবাদ করেছি। সরিষা চাষে খুব বেশি খরচ হয়নি। তারপরও এবার সরিষা গাছে ভালো ফুল ধরেছে। আশা করছি, ফলনও ভালো হবে। অন্যান্য ফসলের মতো সরিষা আবাদে তেমন শ্রমের প্রয়োজন হয় না। জমি থেকে পাকা সরিষা সংগ্রহ ও মাড়াই করে ফসল ঘরে তোলার জন্য পরিবারে নারী পুরুষেয়াও নিয়মিতভাবে কাজ করে থাকি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবদুল ওয়াদুদ এ প্রতিনিধিকে জানান, উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের দেওয়া হচ্ছে নিয়মিত প্রনোদনা ও পরার্মশ। চলতি মৌসুমে জেলায় রেকর্ড পরিমাণ জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে। এবছর নকলা উপজেলায় এক হাজার ৬৩০জন কৃষককে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে প্রনোদনা। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সরিষার আবাদ থেকে কৃষকরা বাড়তি মুনাফা আয় করতে পারবেন বলে এ কর্মকর্তা। কৃষি বিভাগের মাঠ কর্মকর্তারা নিয়মিত পরামর্শ সহ সার্বক্ষণিক মাঠে রয়েছেন। আমি নিজেও কয়েক বার সরিষা ক্ষেত্রের মাঠ পরিদর্শন করেছি। এবার সরিষার ফসলের মাঠ খুবই ভাল এবং ফলনও ভালো।